প্রতীকী ছবি।
কন্টেনমেন্ট জ়োনের মধ্যেই মা ও মেয়ের করোনা ধরা পড়ল নবদ্বীপে। পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাড়িতে ইতিমধ্যেই এক জন সংক্রমিত হওয়ায় সংলগ্ন এলাকা কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হয়েছিল। ১৪ অগস্ট রাতে সেই এলাকার মধ্যেই এক পরিবারের দু’জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এই নিয়ে নবদ্বীপ শহরে মোট ২৪ জনের করোনা ধরা পড়ল। মায়াপুরে সংক্রমণ বেড়ে চলায় নবদ্বীপ, মায়াপুর ও তারণপুর ঘাট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা।
তবে নবদ্বীপ পুরসভা ও হাসপাতালের সব কর্মীর র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় হাঁফ ছেড়েছেন প্রশাসনের কর্তা থেকে সাধারণ বাসিন্দারা। নানা কাজে লোকজনকে ওই দুই জায়গায় নিয়মিত যাতায়াত করতে হয়। সম্প্রতি পুরসভার এক গাড়িচালক এবং নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের নার্স এবং চিকিৎসা করানো কয়েক জন রোগীর করোনা ধরা পড়েছিল। সাময়িক ভাবে পুরসভা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আক্রান্ত পুরকর্মীর সংস্পর্শে আসা অন্য কর্মীদের গৃহ নিভৃতবাসে পাঠানো হয়। পুরসভার মোট ৪৫ জন কর্মীর লালারস পরীক্ষা করানো হয়। নবদ্বীপ হাসপাতালের ক্ষেত্রেও করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা চিকিৎসক ও নার্স-সহ মোট ৪৩ জনের পরীক্ষা করানো হয়েছিল। শনিবার রাতে হাসপাতাল এবং পুরসভার কর্মীদের সকলেরই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
গঙ্গার পূর্ব পারে মায়াপুরে সংক্রমণের ধারা অবশ্য এখনও অব্যহত। নবদ্বীপ ব্লকের মায়াপুর-বামুনপুকুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোল্লাপাড়ায় রবিবার আরও পাঁচ জনের ধরা পড়ার কথা জানা গিয়েছে। এর মধ্যে ন’বছরের এক বালিকাও রয়েছে। এখনও পর্যন্ত ওই এলাকায় মোট ৩৯ জন সংক্রমিতের সন্ধান মিলেছে। ১৫ অগস্ট থেকেই অবশ্য ওই পঞ্চায়েতের তরফে এলাকার দোকান-বাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগামী ২১ অগস্ট পর্যন্ত তিন দিন করে দুই পর্যায়ে সে সব বন্ধ থাকবে। মধ্যে খোলা থাকবে কেবল ১৮ অগস্ট।
এই পরিস্থিতিতে নবদ্বীপ ও মায়াপুরের মধ্যে খেয়া চলাচল বন্ধ করার দাবিও উঠছে। নবদ্বীপের মানুষ ঘিঞ্জি জনবহুল শহরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ভয় পাচ্ছেন। নবদ্বীপ নাগরিক কমিটির সম্পাদক দিলীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মায়াপুর থেকে রোজ নানা কাজে হাজার-হাজার মানুষ নবদ্বীপে আসেন। কয়েকশো রাজমিস্ত্রি যেমন আসেন, তেমনই আসেন ইস্কন-সহ বিভিন্ন মন্দিরের দেশি-বিদেশি ভক্তেরা। এই অবস্থায় সাময়িক ভাবে নবদ্বীপ, মায়াপুর এবং স্বরূপগঞ্জ, এই তিন ঘাটের মধ্যে ফেরি চলাচল বন্ধ করা জরুরি হয়ে পড়ছে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া আর কিছুই পারাপার করতে দেওয়া নিরাপদ নয়। গত ১৩ অগস্ট জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে আমরা এই দাবি জানিয়েছি।”
নবদ্বীপের অন্যতম পুর প্রশাসক বিমানকৃষ্ণ সরাহা রবিবার রাতে বলেন, “নবদ্বীপ, মায়াপুর ও তারণপুর ঘাট বন্ধ করা হচ্ছে।”