এই খাবার নিয়েই চলল বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
শুধু নিম্নমানের খাবার দেওয়া নয়, কম পরিমাণ খাবার দেওয়ার অভিযোগ উঠল কৃষ্ণনগর কর্মতীর্থে নদিয়া জেলা প্রশাসনের নিভৃতবাস কেন্দ্রে। এই অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার ওই নিভৃতবাস কেন্দ্রে বিক্ষোভ দেখান সেখানকার আবাসিকেরা। তাঁদের সঙ্গে গলা মেলান কর্তব্যরত কর্মীদের একাংশও। দুপুরের খাবার নিতে অস্বীকার করেন তাঁরা। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আবার নতুন করে খাবার দেওয়া হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
বস্তুত গোড়া থেকেই এই নিভৃতবাস কেন্দ্রে খাবার সরবরাহ নিয়ে টানাপড়েন চলছে। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের রোগীদের যে সংস্থা খাবার সরবরাহ করে, তাদের প্রথমে বলা হলে তারা রাজি হয়নি। ফলে অন্য একটি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়। এত দিন তারাই খাবার সরবরাহ করছিল। প্রাতরাশ, মধ্যাহ্নভোজ ও নৈশভোজের জন্য প্রতি দিন মাথা পিছু ৯০ টাকা করে দেওয়ার কথা বলা হয় তাদের। কিন্তু সম্প্রতি তারা জানায়, কর্মীরা যে মানের খাবার চাইছেন তা এই টাকায় দেওয়া সম্ভব নয়।
অন্য সমস্যায় দানা বাঁধছিল। জেলা হাসপাতালে প্রতিদিন তিন বেলা খাবার দেওয়ার জন্য মাথা পিছু ৪৯ টাকা ৬০ পয়সা করে বরাদ্দ। তার প্রায় দ্বিগুণ টাকা দিয়ে খাবার আনানোর করার ক্ষেত্রে প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ আপত্তি তোলেন। তার জেরে সিদ্ধান্ত হয়, ওই সংস্থাকে সরিয়ে জেলা হাসপাতালে যারা খাবার সরবরাহ করে, তাদের দিয়ে হাসপাতালের দরেই কর্মতীর্থে খাবার সরবরাহ করাতে হবে।
সেই মতো এ দিন থেকে খাবার সরবরাহ করতে থাকে জেলা হাসপাতালের খাবার সরবরাহকারী সংস্থা। সকালে তারা কলা, পাউরুটি ও লাড্ডু দেয়। তা নিয়ে কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু দুপুরের খাবার দেখেই আবাসিকেরা খেপে যান। ওই খাবার খেতে অস্বীকার করে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এঁদেরই এক জন বাপি মোল্লা বলেন, “দুপুরে সামান্য ভাত, একটু সব্জি আর জলের মতো ডাল দিয়েছিল। এই খাবার কেন খাব? এর চেয়ে না খেয়ে থাকা অনেক ভাল!”
পরে বিকেল ৪টে নাগাদ সেই ভাত, ডাল, সব্জির সঙ্গে ডিমের ব্যবস্থা করা হলে খাবার খেতে রাজি হন আবাসিকরা। পরে খাবার সরবরাহকারী সংস্থার আশিস বসু অবশ্য দাবি করেন, “আমরা মাছ দিয়েছিলাম। কিন্তু ওঁরা সেটা খুলে দেখেননি।” তাঁর মতে, “মাথা পিছু ৪৯ টাকা ৬০ পয়সায় তিন বেলা এর চেয়ে ভাল খাবার দেওয়া সম্ভব নয়।” পরে কর্তারা আবার সিদ্ধান্ত নেন, যে সংস্থা শুরুতে খাবার দিচ্ছিল, তারাই আবার দিনে ৯০ টাকা দরে তিন বেলা খাবার সরবরাহ করবে। রাত থেকেই তারা ফের দায়িত্ব নেয়।
ওই সংস্থার তরফে কুমারদীপ দত্ত বলেন, “আবাসিকদের নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু কর্মীরা আরও ভাল খাবার চাইছিলেন। এই টাকায় সেটা সম্ভব নয় বলেই আমরা খাবার দিতে আপত্তি জানিয়েছিলাম। আশা করছি, সেই সমস্যা আর হবে না।” শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের সুপার শচীন্দ্রনাথ সরকার অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।