প্রতীকী চিত্র।
হয়তো নেহাতই কাকতালীয়, তা হলেও স্বস্তির। টানা ১৮ দিন পরে এই প্রথম একটা গোটা দিন কাটল যে দিন নতুন করে কোনও কোভিড-১৯ সংক্রমণের খবর মিলল না নদিয়ায়।
পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফেরা ইস্তক জেলায় প্রতি দিনই বাড়ছিল সংক্রমণ। তবে শুক্রবার থেকে শনিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত নতুন করে কোনও সংক্রমণের ঘটনা নেই বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। গত ৯ জুনের পরে এমন একটিও দিন যায়নি, যে দিন নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েনি। ফলে এটি জেলা প্রশাসনের কর্তাদের কাছে নিশ্চিত ভাবেই বিষয়টি স্বস্তির, যদিও উপসর্গহীন বাহকদের নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকেই যাচ্ছে।
আশপাশের জেলার তুলনায় নদিয়ায় সংক্রমণ ছড়িয়েছে বেশ কিছু দিন পরে। জেলার উত্তর প্রান্তে তেহট্টে প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে। এর পরে শহর থেকে গ্রাম সর্বত্রই আক্রান্তের হদিস মিলেছে। জেলার যে দু’টি পুর এলাকায় দীর্ঘদিন সংক্রমণ ছিল না, সেগুলি হল বীরনগর এবং কুপার্স ক্যাম্প নোটিফায়েড এরিয়া। বীরনগরেও সম্প্রতি এক জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সেখানে দু’শোরও বেশি মানুষের নমুনা পরীক্ষা করানো হয়েছে এখনও পর্যন্ত। একটিই পজ়িটিভ এসেছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে ফিরে আসা আরও ১১ জন পরিযায়ী শ্রমিকের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। তবে কুপার্সে এখনও কোনও আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি।
গত কিছু দিন ধরে জেলার নানা ব্লক এবং শহরে প্রায় প্রতিদিনই নিয়ম করে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। মাঝে-মধ্যে এক-আধ দিন সংখ্যাটা ছিল একেবারে কম। প্রায় আড়াই সপ্তাহ পরে ফের একটা দিন আবার সংক্রমণের খবর ছাড়াই কাটল। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকাল পর্যন্ত নতুন করে ৬০২ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। জেলায় এখনও পর্যন্ত মোট ২০ হাজার ৯৩১ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। যার মধ্যে শনিবার সকাল পর্যন্ত রিপোর্ট এসেছে ১৯ হাজার ৫০২ জনের।
তবে এর মধ্যে আরো বেশি পরীক্ষার দাবিও উঠছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেন, " আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাক তা আমরাও চাই না। কিন্তু আমরা বলছি উপসর্গযুক্ত বা উপসর্গবিহীন যা-ই হোক না কেন, আরও বেশি সংখ্যক মানুষের পরীক্ষার ব্যবস্থা হোক। যাতে ভবিষ্যতের বিপদ চিহ্নিত করা যায় এবং সতর্ক হওয়া যায়। "
তবে জেলা প্রশাসনের দাবি, প্রতিদিনই পর্যাপ্ত সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা করানো হচ্ছে। জেলাশাসক বিভু গোয়েল বলেন, " প্রতিদিন জেলায় গড়ে ছয়শো থেকে সাতশো জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে, তাঁদের উপসর্গ থাক বা না-ই থাক। এই সংখ্যাটা আরও বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।"