ফাইল চিত্র
করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে পাইকারি বাজারে কলার বিক্রি কমায় মাথায় হাত পড়েছে নদিয়ার সীমান্ত এলাকার কলা চাষিদের। তেহট্ট মহকুমার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকায় কলার চাষ হয়। এলাকার বহু চাষি বর্তমানে কলা চাষের উপর নির্ভরশীল। এই চাষিরা এখানে উৎপাদিত কলা স্থানীয় হাটে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। সেখান থেকে বেশির ভাগ কলা ট্রাক বোঝাই হয়ে বিহার, ঝাড়খণ্ড বা ওড়িশার বিভিন্ন বাজারে চলে যায়। গত কয়েক দিন থেকে করোনার আতঙ্কে সেই বাজারে কলার বিক্রি কমেছে। ফলে এক ধাক্কায় কলার দামও নেমে গিয়েছে। রাজাপুরের পাইকারি কলা ব্যবসায়ী সুধীরঞ্জন সমাদ্দার, অনিমেষ প্রামাণিকেরা জানান, বেতাই, নাজিরপুর কিংবা করিমপুরে অনেক কলার হাট রয়েছে। শুধুমাত্র হোগলবেড়িয়ার রাজাপুরেই চারটি হাট আছে এবং প্রতিদিন সেখানে দু’টি করে হাট বসে। এলাকার চাষিরা তাঁদের জমির কলা সেই হাটে বিক্রি করেন। প্রতিদিন এই দুই হাট থেকে প্রায় চোদ্দো-পনেরোটি ট্রাকে বোঝাই করে এত দিন কলা ভিন রাজ্যে পাঠানো হত। কিন্তু করোনার আতঙ্কে কলার চাহিদায় ভাঁটা পড়েছে। ফলে এখন কিছু দিন কলা যাতে পাঠানো না-হয় সে কথা বিহার-ঝাড়খণ্ডের ব্যবসায়িরা ফোন করে জানিয়ে দিয়েছেন। তাতেই চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।
বিহারের এক ব্যবসায়ী ইসরাফিল বিশ্বাস জানান, করোনার আতঙ্কে পাইকারি বাজারে কলা কেনার খরিদ্দার অসম্ভব কমেছে। কলা বিক্রি হচ্ছে না। তাই আপাতত কিছু দিন তেহট্ট থেকে বেশি কলা পাঠাতে বারণ করা হয়েছে। হোগলবেড়িয়ার কলা চাষি মনোজ মণ্ডল বলেন, ‘‘ফাল্গুন মাস থেকে বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাস পর্যন্ত কলা উৎপাদনের প্রধান মরসুম। শীতের সময় সে ভাবে কলা হয় না, বাজারে দামও থাকে না। শীতের সময়ে যে কলার দাম ছিল একশো টাকা এখন সেই কলা প্রায় আড়াইশো টাকাই বিক্রি হচ্ছিল। সাধারণত শীতের পর মাস তিনেক কলার দাম ভাল থাকে। সেই কারণে আমরা এই সময়ের দিকে তাকিয়ে থাকে। তার মধ্যে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় আমাদের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।’’ করিমপুরের কলা চাষি অভিজিৎ বিশ্বাসের কথায়, “আমার আড়াই বিঘে জমিতে কলার চাষ আছে। কলার বিক্রি বন্ধ থাকলে খুব সমস্যা হবে। সময় পেরিয়ে গেলে গাছেই কলা পেকে যাবে। কাঁচা মাল হওয়ায় রাখা যাবে না।”