পাশে-থাকা: বহরমপুরে।
নিতান্তই মায়া জড়ানো চেখ। রাস্তার পাশে চুপ করে বসে আছে। খাবার না পেয়ে শরীর কঙ্কালসার। নিত্যকার হাঁকডাক অকারণ দাপট দেখানো উধাও।
বহরমপুর কিংবা জেলার বিভিন্ন শহরে ওদের দেখা মিলছে এমনই অচেনা চেহারায়। করোনাভাইরাসের আতঙ্কে দুয়ারে কুলুপ এঁটেছে পাড়া-পড়শি। জনতা কার্ফুর হাত ধরে লম্বা লক ডাউনে রাস্তাঘাট ফাঁকা। শূন্য পড়ে রয়েছে এঁটোকাঁটা বোঝাই আবর্জনার চেনা স্তূপ।
এই অবস্থায় বহরমপুরের একটি পশুপ্রেমী সংস্থার কর্তারা অন্তত তাদের পাশে থাকার ইচ্ছে নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। ঘরে তোলা খাবার থেকেই কিঞ্চিৎ তাদের জন্য ছড়িয়ে রাখছেন পথে-প্রান্তরে। ঘুরে ঘুরে আপাতত তাঁরা খোঁজ করছেন বহরমপুর ও জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জের রাস্তায় রাত-বিরেতে শাসন করা ‘তাদের।’ এ অবস্থায় তাদের পাশে না-থাকলে শহর জুড়ে ক’দিন পরে যে না খেয়ে মরবে তারা।
প্রাণি সম্পদ বিকাশ দফতরের উপ অধিকর্তা তারাশঙ্কর পান বলেন, ‘‘ওদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কোনও সরকারি তহবিল নেই। এ বার এ ব্যাপারটাও বেবে দেখতে হবে। ওদের পাশে থাকাটাও আমাদের কর্তব্য যে!’’
অ্যানিম্যালস রেসকিউ ট্রাস্ট নামে বহরমপুরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার মেঘা মেহরা বলেন, ‘‘রবিবার থেকে রাস্তায় যানবাহন নেই বললেই চলে। ফলে ওদের চোট-আঘাতের সম্ভাবনা নেই। কিন্তু খাবার কোথায়, ফলে শহরের রাস্তা থেকেই উধাও হয়ে য়াচ্ছে তারা। তাঁর দাবি, ‘‘শুধু বহরমপুর, জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জের রাস্তাতেই ওরা প্রায় হাজার খানেক। এখন ঘুরে ঘুরে তাদের অন্নসংস্থান করে বেড়াচ্ছি আমরা। আমাদের আবেদন, জেলার সবাই আমাদের কিছু কিছু খাবার দিয়ে সাহায্য করুন।’’
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রীর ডাকে দেশজুড়ে জনতা কার্ফু হয়েছে। তার পরের দিন থেকে রাজ্যে লকডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। যার প্রভাব সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পড়েছে ওদের উপরেও। হোটেল, বাজার, অফিস, দোকান বন্ধ। ফলে যে কাবারটুকু তারা খুঁটে খেত সেই উচ্ছিষ্টটুকুও পাচ্ছে না তারা।
পথ-কুকুর বলে কি তারা প্রাণী নয়!