তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। —ফাইল চিত্র।
বার বার দলের জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দেগে পাকাপাকি ভাবে শিরোনামে জায়গা করেছেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। এ বার জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে রাজ্যে নেতৃত্ব ও জেলারের সংগঠনের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুবে ফের শিরোনামে জায়গা করেছেন হুমায়ুন। কিন্তু হুমায়ুনের মন্তব্যের পর জেলা জুড়ে রাজনৈতিক কারবারিদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। যদিও হুমায়ুন বলেন, “আমাদের দলের বিষয় নিয়ে বিরোধীদের মাথা না ঘামালেই ভাল হয়।”
রাজনৈতিক কারবারিদের মতে শাওনি সিংহ রায়ের বিরুদ্ধে যে ভাবে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব শুরু করেছিলেন হুমায়ুন, যার জেরে রাজ্য নেতৃত্ব শেষ পর্যন্ত শাওনিকে জেলা সভাপতি থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন, এবারও কি অপূর্ব ও রবিউলকে পদ থেকে সরাতে ওই একই ‘কৌশল’ নিয়েছেন হুমায়ুন! যদিও এটা নিয়ে জেলার বিরোধী দলের নেতৃত্ব অবশ্য মন্তব্য করতে ছাড়েননি।
জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, “তৃণমূলের বর্তমান জেলা সভাপতি ও চেয়ারম্যানের আমলে জেলা জুড়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকট হয়েছে। আর হুমায়ুনকে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব রান্নার কড়াইয়ের মতো ব্যবহার করছেন। জেলার গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নামক যাত্রাপালাখানি উপভোগ করেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা বলেন, “ওই দলের দ্বন্দ্বের শেষ আছে নাকি! রাজ্য জুড়েই তৃণমূলের দ্বন্দ্ব লেগেই আছে। ওই দলের প্রসঙ্গে যতটা কম কথা বলা হয় ততই ভাল।” তৃণমূলের বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান রবিউল আলম চৌধুরী বলেন, “আমাদের দলের একটা শৃঙ্খলা আছে। সেটা নিয়ে শৃঙ্খলা কমিটি সেটা নিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন। আর যারা বিরোধী আছেন তাঁরা নিজেদের চরকায় তেল দিলেই মনে হয় ভাল হয়। নিজেদের সংগঠনের দিকে নজর দিক।”
বিজেপির জেলা সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, “এ সব তৃণমূলের ভাগ বাটোয়ারার বিষয়। আর হুমায়ুন কবীর যেখানে থাকেন অন্য ভাবেই থাকেন। কংগ্রেসে, বিজেপিতে যখন ছিলেন অন্য ভাবে ছিলেন। এখন তৃণমূলে আছে সেখানেও তাই। তৃণমূলের নেতারা হুমায়ুনকে দিয়েই লোকসভা ভোটের সময় কী কথা বলিয়ে ছিলেন সেটা সকলেই জানেন। হুমায়ুনের ওই কথায় জেরেই আজকে ইউসুফ পাঠান সাংসদ হয়েছেন।”
হুমায়ুন বলেন, “প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের ভোটে জয়ী হওয়ার একটি কৌশল থাকে। বড়ঞাতে নেত্রী যে সভা করেছিলেন, সেখানে আমাকে ডেকে ইউসুফ পাঠানকে জয়ী করানোর জন্য আমাকে মন দিয়ে ভোটের কাজ করতে বলেছিলেন। আমি নেত্রীর নির্দেশ মেনে ভোটের জন্য অনেক কৌশল অবলম্বন করেছিলাম। আমি কোন ভাবেই দাঙ্গাবাজকে সমর্থন করি না। যোগী আদিত্যনাথ যে ভাষা ব্যবহার করেছিলেন আমি তার পাল্টা জবাব দিয়ে ছিলাম।” দলের পক্ষ থেকে কোন নোটিস এখনও পাননি বলে দাবি করেছেন হুমায়ুন।