বাইরনকাণ্ডে সাগরদিঘির কংগ্রেস নেতৃত্ব অধীরকে দায়ী করছেন। তাঁদের প্রশ্ন, কেন বাইরনে বিশ্বাস রাখলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি?
বাইরন বিশ্বাস তৃণমূলের পতাকা তুলে নিয়েছেন ২৪ ঘণ্টা হল। কিন্তু মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির বিধায়কের এমন আচমকা দলত্যাগ মেনেই নিতে পারছেন না স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব। কেউ কেউ সরাসরি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চোধুরীর উপর। সেই অধীর আবারও বাইরনকে নিয়ে মুখ খুললেন। দাবি করলেন, বাইরন তাঁকে কথা দিয়েছিলেন কোনও অবস্থাতেই দল ছাড়বেন না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কথা রাখেননি। যদিও এই সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন বাইরন।
মঙ্গলবার দুপুরে বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন প্রদেশ সভাপতি অধীর। বাইরনের উপর তিনি কেন আস্থা রেখেছিলেন, এই প্রশ্ন তুলেছেন সাগরদিঘির কংগ্রেস নেতৃত্ব। এ নিয়ে অধীরের দাবি, ‘‘সাগরদিঘির উপনির্বাচনে কংগ্রেস সর্বসম্মত প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছিল না। বাইরনের সঙ্গে আমার দীর্ঘ দিনের পরিচয় ছিল। দিল্লিতেও বার কয়েক আমার সঙ্গে দেখা করে ও। ওর পরিবার প্রণববাবুর (মুখোপাধ্যায়) হয়ে ভোট করেছিল। ও আমাকে কংগ্রেস প্রার্থী করার জন্য অনুরোধ করে। আমি ওকে বলেছিলাম, ‘ভয় পেয়ে যাবে না তো’? উত্তরে বাইরন আমাকে আশ্বস্ত করে বলেছিল, ‘আমাকে এমন ভাবলেন দাদা? আমি কোনও দিন দল ছাড়ব না। কোনও ভয় পাব না। ভরসা করে দেখুন। ঠকবেন না’। অধীরের আরও দাবি, ‘‘আমার কাছে এসে খুব কান্নাকাটি করেছিল (বাইরন)। কথা দিয়েছিল, কোনও দিন দল ছাড়বে না। তবুও কথা রাখল না!’’
বাইরনের কথা বলতে গিয়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসের স্মৃতি রোমন্থন করেন অধীর। তাঁর দাবি, বাইরনের পরিবারেরও হয়তো বাধা ছিল। তিনি বলেন, ‘‘ও এমনিতেই বড় ব্যবসায়ী। সেখানে একাধিক বাধার মুখোমুখি হচ্ছিল ওঁরা। পরিবার থেকেও তাই বাইরনের উপর ক্রমাগত চাপ বাড়ছিল। চাপ সামলাতে না পেরেই বাইরন তৃণমূলে যোগ দিয়েছে, এমনটা আমার বিশ্বাস।’’
তৃণমূলে সদ্য যোগ দেওয়া বাইরনকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি অধীরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, তিনি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর কংগ্রেসের তরফে যা যা অভিযোগ করা হচ্ছে, তা সত্য নয়। বাইরনের দাবি, কংগ্রেসে থেকে তিনি কাজ করতে পারছিলেন না। তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রের মানুষের কথা ভেবেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বাইরনের কথায়, ‘‘আমার সম্পর্কে যা যা বলা হচ্ছে সব ফালতু কথা। আমার সঙ্গে আমার পরিবারের সম্পর্ক খুবই ভাল। আর ব্যবসায়িক কারণে আমি কংগ্রেস ত্যাগ করিনি।’’
অন্য দিকে, অধীর বলেন, ‘‘কথোপকথনের কোনও অডিয়ো বা ভিডিয়ো রেকর্ডিং তো আমি করে রাখিনি। তাই বাইরন এ সব কথা অস্বীকার করলে আমার কিছু করার নেই।’’