ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার চেষ্টা বানচাল করে দিলেন কংগ্রেসের কাউন্সিলররা। সম্প্রতি তৃণমূলের বহরমপুর পুরসভায় কংগ্রেসের দুই কাউন্সিলরকে গুরুত্বপূর্ণ দুই দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে একটি পুরসভার “সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট” বিভাগ। যার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল পুরসভার বিরোধী নেতা কংগ্রেসের হিরু হালদারকে। হিরুর পাশাপাশি কংগ্রেসের আর এক কাউন্সিলর গোপাল সিংহকে এনএসএপি বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সদ্য সমাপ্ত পুরপ্রধান ও কাউন্সিলর বৈঠকে। কিন্তু দুই কাউন্সিলরের কেউই পুরপ্রধানের দেওয়া দায়িত্ব গ্রহণ করছেন না বলে জানান হিরু।
কংগ্রেস পরিচালিত বহরমপুর পুরসভা, পরিষেবার নিরিখে এক সময় রাজ্যের কাছে উদাহরণ ছিল। সেই পুরসভা কংগ্রেসের হাতছাড়া হওয়ার বছর দেড়েকের মধ্যে মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়। তার পর থেকে শহরের অন্য পরিষেবার তুলনায় সাফাই বিভাগের পরিষেবা একেবারে ভেঙে পড়ে। সেই সঙ্গে কাশিমবাজার রিং রোডের ডাম্পিং গ্রাউন্ড বা ভাগাড়ের অবস্থা বেহাল হয় দিনের পর দিন। ওই ডাম্পিং গ্রাউন্ডের সামনের রাস্তা দিয়ে চলাচল এক প্রকার বন্ধ হয়ে যায়।
এ দিকে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট নিয়ে নানা পরিকল্পনার কথা তৎকালীন পুর প্রশাসক হাজারও আশার কথা শোনালেও আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। অবস্থার পরিবর্তনের জন্য পিএসি থেকে কলকাতা হাইকোর্ট সর্বত্র দরবার করেছেন বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী। কংগ্রেসের দাবি, তাঁর নালিশের প্রেক্ষিতে নির্দেশ এলে প্রাথমিক ভাবে কিছুটা নড়েচড়ে বসে পুরসভা। তারপর ফের একই অবস্থায় ফিরে যায় ভাগাড়। চলতি নির্বাচনেও “ভাগাড়”-কে সামনে রেখেই প্রচারে নেমেছিল কংগ্রেস।
সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে এই ভাগাড়ের বেহাল দশা নিয়ে মামলা করেন অধীর। সেই মামলার রায়ে বিচারক ওই ডাম্পিংগ্রাউন্ডের আবর্জনার স্তূপ পরিষ্কারের জন্য পুরসভাকে নির্দেশ দিয়েছে। সেই কাজ শুরু করে হিরুকে পুরসভার ওই বিভাগের ভার দিয়ে অধীরের মুখ বন্ধের চেষ্টা করেছিলেন পুরপ্রধান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়, দাবি রাজনৈতিক মহলের।
কিন্তু পদ প্রত্যাখ্যান করে সেই চেষ্টায় জল ঢেলেছেন কাউন্সিলররা। এদিন হিরু বলেন, “সংবাদমাধ্যম মারফত আমি এই দায়িত্বের কথা শুনেছিলাম। ওদের এতগুলো কাউন্সিলর থাকা সত্ত্বেও অধীর চৌধুরী যে বিষয় নিয়ে লাগাতার আন্দোলন করে যাচ্ছে সেই বিভাগের দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হয়েছিল পরিকল্পনা করে। মঙ্গলবারের সাধারণ বৈঠকে আমি সবার সামনে মৌখিক ভাবেই জানিয়েছি পুরসভার ভাল মন্দ তুলে ধরাই বিরোধী দলনেতার কাজ আমি সেই কাজটাই পালন করব।”
পুরপ্রধান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “সস্তার রাজনীতি না করে দায়িত্বপূর্ণ রাজনীতি করতে হবে কংগ্রেসকে। আমরা ছুৎমার্গ না রেখে ওদের দু’জন কাউন্সিলরকে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ কমিটির সভাপতি করেছিলাম মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার জন্য। অন্য এক জন কাউন্সিলরকে অর্থ কমিটির সদস্য করা হয়েছিল। ২৮ জন কাউন্সিলরকেই বহরমপুরের উন্নয়নের শরিক হতে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু কংগ্রেস সহযোগিতা না করলে ধরে নিতে হবে বোর্ড না পেয়ে পুরসভার উন্নয়নমূলক কাজে বেগড়া দেওয়াই ওদের এখন প্রাথমিক কর্তব্য।”