—প্রতীকী চিত্র।
ডিস্ট্রিবিউটর নন, নবদ্বীপের রান্নার গ্যাসের সঙ্গে সাধারণ গ্রাহকের আধার কার্ড লিঙ্ক করাচ্ছেন বিজেপি কর্মীরা। কার অনুমোদন নিয়ে তাঁরা একাজ করছেন জানতে গেলে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের হাতে মার খেতে হল তাদের দলের কর্মী-সমর্থকদের। এমনই অভিযোগ তৃণমূলের। মারের চোটে তৃণমূলের নবদ্বীপের ১৪ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাক ফেটে গিয়েছে বলে অভিযোগ। এ ছাড়াও তাদের জনাচারেক কর্মী জখম হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার নবদ্বীপ পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির লোকজন আধার লিঙ্ক করার সময় তাদের বাধা দেয় তৃণমূল। বুধবার বিকেলের পর ফের একই কায়দায় বিজেপির লোকজন রাস্তার ধারে টেবিল পেতে আধার লিঙ্কের কাজ শুরু করে দেয়। এদিন তারা বেছে নেয় ৪ নম্বর ওয়ার্ডকে। বিভিন্ন ওয়ার্ডের তৃণমূলের চারজন পুরপ্রতিনিধি -সহ কিছু কর্মী, সমর্থক সেখানে পৌঁছে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করতেই শুরু হয়ে যায় বাদানুবাদ। অভিযোগ, পুলিশের সামনেই বচসা চলাকালীন শুরু হয় মারধর। তৃণমূলের ১৪ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা জানতে চেয়েছিলাম কীসের ভিত্তিতে ওরা আধার কার্ড লিঙ্ক করাচ্ছে। কে ওদের অনুমতি দিয়েছে। ওরা বলল, সরকারি অনুমতি নিয়েই নাকি একাজ করছে। আমরা অনুমতির কাগজ দেখতে চাইনে ওরা উত্তেজিত হয়ে তর্কাতর্কি শুরু করে। এরপর আমাদের এক কর্মী দিবেন্দ্যু রাহাকে মারতে গেলে আমি বাধা দিই। তখনই আমাকে টেনে হিঁচড়ে মারধর শুরু করে।”
রান্নার গ্যাসের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযোগ নিয়ে রাজ্যের সর্বত্র যখন হইচই পড়ে গিয়েছে। তখন আশ্চর্যজনক ভাবে নবদ্বীপের কোনও গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটরই আধার সংযোগের কাজ শুরু করেননি। কেন কাজ শুরু হয়নি সেই প্রশ্নে মুখে কুলুপ এঁটেছেন শহরের চার ডিস্ট্রিবিউটর। ফোন করা হলে কেউ ফোন তোলেননি। কাপও পরিবারের তরফে জানানো হয় তিনি অসুস্থ।
এ প্রসঙ্গে বিজেপির দাবি, নবদ্বীপের চার জন গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটর যেহেতু আধার লিঙ্কের কাজ করছেন না তাই মানুষ যাতে গ্যাসের ভর্তুকি থেকে বঞ্চিত না থাকেন সেই উদ্দেশ্যেই তাঁরা এই জনসেবা করছিলেন। দলের নবদ্বীপ শহর উত্তর মণ্ডল সভাপতি আনন্দ দাস বলেন, “তৃণমূল গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে গিয়ে এই কাজ করার জন্য পদক্ষেপ না করে আমাদের কাজ বন্ধ করতে চাইছে।” নবদ্বীপের পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, “বিজেপি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে একাজ করছে। গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটরদের বদলে বিজেপি গ্যাসের লিঙ্ক করার নামে মানুষের গোপন তথ্য হাতিয়ে নিতে চায়। আমরা মানুষকে সেই কথা বলব। ভুলেও যেন কেউ ওই ফাঁদে পা না দেন। আমাদের কর্মীরা বিষয়টি ধরে ফেলায় এই ঘটনা।”
বিজেপি নেতা জীবন সেন বলেন, “আমরা ওখানে ছিলাম ২৫ জন আর তৃণমূল আড়াইশো। তৃণমূলের লোকজনই আমাদের সবাইকে মারধর করেছে পুলিশের সামনে। বৃদ্ধাকেও ছাড়েনি। আর এই সংযোগ যে কেউ করতে পারে। এতে কোনও অন্যায় নেই। আমাদের কাছে সাংসদের চিঠিও আছে।” যদিও আধার কার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথি নিয়ে সাংসদের চিঠির ওপর নির্ভর করে একটি রাজনৈতিক দলের কর্মী হিসাবে আধার লিঙ্কের কাজ করা যায় কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে।