মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ। —ফাইল চিত্র।
বর্ধমান, মেদিনীপুর এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরে এ বারে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শাসানি ও হুমকির সংস্কৃতির (থ্রেট কালচার) অভিযোগ উঠল। এ বিষয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে একগুচ্ছ চিকিৎসকের ছবি-সহ একটি পোস্টার সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে (যার সত্যতা আনন্দবাজার পত্রিকা যাচাই করেনি)। তাতে আর জি করের অপসারিত অধ্যক্ষ তথা সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়া সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে সেই সব চিকিৎসকদের ছবি দেখা যাচ্ছে। একই সঙ্গে তাঁরা যে হুমকি এবং শাসানির সংস্কৃতি চালিয়ে যাচ্ছেন সে কথাও সেই পোস্টারে বলা হয়েছে।
ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের বহরমপুর শাখার সম্পাদক রঞ্জন ভট্টাচার্য বৃহস্পতিবার এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘ওই পোস্টারে যা দাবি করা হয়েছে তার সত্যতা রয়েছে। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও শাসানি ও হুমকির সংস্কৃতি রয়েছে। স্বাস্থ্য মাফিয়ার সিন্ডিকেট, উত্তরবঙ্গ লবি সক্রিয় রয়েছে।’’ তবে বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের অধ্যক্ষ অমিত কুমার দাঁ ভাইরাল হওয়া পোস্টার দেখার পরে বলেন, ‘‘আমার কাছে এই ধরনের কোনও অভিযোগ নেই।’’
রঞ্জন ভট্টাচার্য মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের প্রধান ছিলেন। গত মার্চে তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল থেকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে বদলি করা হয়েছে। রঞ্জনের দাবি, ‘‘উত্তরবঙ্গ লবি এবং শাসানি ও হুমকি সংস্কৃতির স্বীকার হয়েছি। আমি থাকতে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই লবি ঠিক মতো কাজ করতে পারছিল না। তাই আমাকে বাঁকুড়ায় বদলি করে দেওয়া হল। উত্তরবঙ্গ লবির বদান্যতায় শ্লীলতাহানির ঘটনায় অভিযুক্ত এক চিকিৎসক বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এক বিধায়কের ভাই মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক, তিনি দাপটের সঙ্গে শাসানি ও হুমকির সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এই সিন্ডিকেটের এক চিকিৎসকের বাড়ি মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে। তিনি মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে পোস্টিং পেয়েছেন। দু’জন চিকিৎসকের পড়াশোনার মান খারাপ হলেও উত্তরবঙ্গ লবির বদান্যতায় এই পরীক্ষায় পাশ করেছেন। তাঁরা মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে কলেজে শাসানির সিন্ডিকেট চালাচ্ছেন।’’
যদিও অভিযুক্তদের পক্ষে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসক নেতা বলেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। অনেকের সঙ্গে অনেকের ছবি থাকতে পারে। পুরনো একটি ছবিকে কেন্দ্র করে এমন রটছে। আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করতে কিছু ব্যক্তি নিজস্ব আক্রোশ মেটাতে এ সব করছেন।’’