শিক্ষাকে বদলির প্রতিবাদে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বাইরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন অভিভাবকেরা। মঙ্গলবার পায়রাডাঙায়। ছবি সুদেব দাস।
শাসনের নামে এক শিশুকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শৌচালয়ে আটকে রাখার অভিযোগ উঠল শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে পায়রাডাঙার ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বাইরে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকেরা। শিক্ষিকাকে অন্যত্র বদলির দাবি ওঠে এছাড়াও এ দিন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বয়কটকরা হয়।
রানাঘাট-১ ব্লকের পায়রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের উকিলনাড়াতে রয়েছে ৩৬৫ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। প্রতিদিন সকালে স্থানীয় প্রফুল্ল নগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে চলে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি। সেখানে বর্তমানে পাঁচজন প্রসূতি ও ৩০ জন শিশু পরিষেবা পায়। অভিযোগ, বছর কয়েক আগে এই কেন্দ্রে বদলি হয়ে আসেন শিক্ষিকা অলকা সাহা। তিনি শিশুদের মারধর করতেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, গত সোমবার কেন্দ্রের একটি শিশুকে দীর্ঘ সময় শৌচালয়ে আটকে রাখা হয়। পরে ওই স্থানীয় এক মহিলার বিষয়টি নজরে আসায় তিনি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এসে শৌচালয়ের দরজা খুলে শিশুটিকে উদ্ধার করেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশুদের হেনস্থা করা হয়। যেখানে পর্যাপ্ত পুষ্টি ও শিশুমনের বিকাশের জন্য অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, সেই কেন্দ্রই এখন শিশুদের কাছে নিরাপদ নয়। মঙ্গলবার সকালে কেন্দ্রের বাইরে অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে বদলির দাবিতে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকদের একাংশ। বিক্ষোভে সামিল হন স্থানীয় বাসিন্দারাও। মাম্পি জোয়ারদার নামে এক মহিলা বলেন, "ছেলেকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে পাঠাব বলে তৈরি করছিলাম। হঠাৎই ও কান্নাকাটি শুরু করে। কাঁদতে কাঁদতে বলে, স্কুলে যাব না। আবার আমাকে আটকে রাখবে। পরে জানতে পারি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এসে কান্নাকাটি করার অপরাধে ছেলেকে শৌচালয়ে আটকে রাখা হয়েছিল। শুধু আমার ছেলের সঙ্গে নয়, অন্য ছেলে-মেয়েদের সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটেছে।"
অভিযুক্ত শিক্ষিকা অলকা সাহা দাবি, ‘‘অকারণে ওই শিশু শৌচালয়ে যাওয়ার বাহানা করছিল। তাই শুধুমাত্র শাসন করতেই ওকে বলেছিলাম শৌচালয়ে আটকে রাখব। আদৌ আটকে রাখার ঘটনা ঘটেনি। আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা।"
প্রশ্ন উঠছে, শিশুমনে ভয়ভীতি সৃষ্টি করে কী শাসন সম্ভব?
রানাঘাট-১ ব্লকের শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক মেঘনাথ মিস্ত্রি বলেন, "বিষয়টি নজরে এসেছে। ওই শিক্ষিকাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। সম্পূর্ণ খোঁজখবর করে ব্যবস্থানেওয়া হবে।"