জলঙ্গির জোড়তলা এলাকায় রাস্তার পাশে কাটা গাছের গুঁড়ি। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম।
তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে রাজ্য সড়কের পাশে থাকা দামি গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠল সোমবার। ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযোগ তুললেন খোদ জলঙ্গি ব্লক তৃণমূলের সভাপতি থেকে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা। তৃণমূল নেতাদের একাংশের দাবি, বিদ্যুতের উচ্চ ক্ষমতার সংযোগের জন্যই কিছু গাছের ডাল ছাঁটাই করার কথা। আর ওই ছাঁটাইয়ের নামে রীতিমতো দামি গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে বলে তাঁদের দাবি। যদিও জলঙ্গি পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ বাবুলাল মণ্ডল বলেন, ‘‘পুরোপুরি ভিত্তিহীন অভিযোগ।’’ প্রশাসনের দাবি, তাদের কাছে গাছ কাটার কোনও খবর নেই।
সোমবার দুপুরে জলঙ্গির সাহেবরামপুর এলাকা থেকে জোড়তলা পর্যন্ত বেশ কিছু গাছ কাটার কাজ চলছিল। জলঙ্গির ‘পথের সাথী’র কাছে বেশ কিছু দামি গাছ কেটে করাত মিলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। জলঙ্গি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য জেলা যুব তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি রাকিবুল ইসলামের অভিযোগ, ‘‘বিদ্যুৎ দফতরের নাম করে বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ ও বিডিও অফিসের অস্থায়ী এক কর্মী ওই কাজ করছিলেন বলে জানতে পেরেছি। চুরি করে করাত মিলে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াও করা হচ্ছিল। আমরা এসে হাতেনাতে ধরার পরেই বন্ধ হয়েছে।’’ একই সুরে জলঙ্গি দক্ষিণ জোনের ব্লক তৃণমূল সভাপতি মাসুম আলি আহমেদ বলেন, ‘‘বন দফতর, পূর্ত দফতর এবং ব্লক প্রশাসনকে অন্ধকারে রেখেই গাছ কাটার কাজ হচ্ছিল বলে জানতে পেরেছি। আর জানতে পেরেই আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাধা দিয়েছি।"
বাবুলাল অবশ্য বলেন, ‘‘আমি গাছ কাটার অনুমতি দেওয়ার কেউ নয়। কিছু ডাল ছাঁটার জন্য পঞ্চায়েত সমিতিতে একটা মিটিং হয়েছিল এইটুকু জানি।’’
এই ঘটনাকে ঘিরে আবারও জলঙ্গিতে গোষ্ঠী কোন্দলের তত্ত্ব খাড়া হয়েছে। জলঙ্গি ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলেন, ‘‘এটা তো ছোটখাট ব্যাপার, তৃণমূল নেতারা যা সামনে পাবে সেটাই খেয়ে নেবে। তৃণমূলের ক্ষেত্রে এটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। অন্তর্দ্বন্দ্ব না থাকলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতো না।’’ জলঙ্গির বিডিও সুব্রত মল্লিক বলেন, ‘‘গাছ কাটার বিষয়ে কোনও রকমের খবর আমাদের কাছে নেই। বন দফতর বলতে পারবে অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি না।’’ অন্যদিকে বন দফতর ও পূর্ত দফতরের কর্তারাও ওই গাছ কাটা নিয়ে কিছুই বলতে পারেননি। এমনকি তাঁদের অনুমতি নেওয়া হয়নি বলেও দাবি দু’টি দফতরের কর্তাদের।