প্রতীকী ছবি।
ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত মহিলাকে বাঁচাতে রক্ত নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা। এ মাসেই ৩৫ ইউনিট রক্তের জোগান দিতে হবে মহিলাকে। একই ভাবে অন্তত কয়েক মাস তো বটেই। তাই ওই সংস্থার তরফে মুর্শিদাবাদের প্রতিটি সংস্থার কাছে রক্ত চেয়ে সাহায্য চাওয়া হয়েছে।
রঘুনাথগঞ্জের গোপালনগর গ্রামের মহিলা রুমা সাহার চিকিৎসা চলছে কলকাতার এক বেসরকারি নামী ক্যানসার হাসপাতালে। কেমো দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মাসে অন্তত ৩৫ বোতল রক্ত লাগবে তার জন্য। সেই রক্তের জোগান দিতেই ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ডাকে সাড়া দিয়ে শমসেরগঞ্জের নতুন রতনপুর গ্রামের যুবকেরা রক্ত দিতে ছুটছেন ৩০০ কিলোমিটার পেরিয়ে কলকাতার ওই হাসপাতালে। ২০ জুন সোমবার ৫ যুবক ট্রেনে কলকাতায় গিয়ে রক্ত দিয়ে এসেছেন ওই মহিলাকে। ফের সোমবার গিয়েছিলেন ৭ যুবক গাড়ি ভাড়া করে সেখানে। তাঁদের এই চেষ্টা দেখে পাশে দাঁড়িয়ে নিজেও এক ইউনিট রক্ত দিয়েছেন ভাড়া গাড়ির চালকও। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ‘এ পজিটিভ’ রক্ত প্রয়োজন বছর ৪০ বয়সের ওই মহিলার জন্য। যে কোনও গ্রুপের রক্তের ডোনার সংগ্রহ করে আনছেন ওই পরিবারের লোকজন। বিনিময়ে হাসপাতাল থেকে “এ পজিটিভ” রক্তের ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে।
মহিলার স্বামী সুকান্ত সাহা একটি দোকানের কর্মচারী। ৩ বছরের অহনা তাদের একমাত্র মেয়ে। মহিলার বাবার বাড়ি অরঙ্গাবাদে। দাদা সুজয় সাহা বলছেন, “কেমো চলছে। কিছুটা সুস্থ হলেও আশঙ্কা তো আছেই। কত দিন এভাবে রক্ত দিতে হবে চিকিৎসকরা তা বলতে পারছেন না। এত রক্তের জোগান পাওয়াও ছিল অসম্ভব। কিন্তু পাশে দাঁড়িয়ে আশ্বাস দিয়ে এগিয়ে এসেছেন শমসেরগঞ্জের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। প্রতি সোমবার শমসেরগঞ্জের নতুন রতনপুর থেকে সেখানকার যুবকেরা দল বেঁধে এসে রক্ত দিয়ে যাচ্ছেন। সেই রক্তই দেওয়া চলছে বোনকে।”
ওই সংস্থার সভাপতি উমর ফারুক বলছেন, “রুমা দেবীর পরিবার আমাদের পরিচিত নয়। রঘুনাথগঞ্জের ওই মহিলার মাস তিনেক আগে ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে। ইতিমধ্যেই প্রচুর অর্থ খরচ করেছেন তারা। কিন্তু রক্ত বাধা হয়ে দাঁড়ায় তার চিকিৎসায়। তার দাদা সুজয় সাহা সব ঘটনা জানিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। রুমার ছোট্ট ৩ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। তার যে কান্না তা চোখে দেখতে পারিনি। তাই কথা দিয়েছি মহিলাকে বাঁচাতে যা রক্তের প্রয়োজন তা সাধ্য মতো সংগ্রহ করে দেব আমরা।’’