মহুয়া মৈত্র।
খারিজ করা হয়েছে কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সদস্য পদ । যা নিয়ে জেলা জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে বিজেপির নেতা-কর্মীরা যেমন উল্লসিত। অন্যদিকে তৃণমূলের লোকজন গোটা বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে শুরু করেছে। বিজেপি মহুয়ার গায়ে ‘দেশ বিরোধী’ তকমা লাগিয়ে দিতে মরিয়া। অন্য দিকে তৃণমূল প্রচার করতে শুরু করেছে আদানির বিরুদ্ধে সরব হওয়াতেই প্রতিহিংসার শিকার হতে হল কৃষ্ণনগরের সাংসদকে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে লোকসভা ভোটের আগে জোর চর্চায় কৃষ্ণনগর।
শুক্রবারই সংসদে রিপোর্ট জমা দেয় এথিক্স কমিটি। রিপোর্ট পাওয়ার পর এদিনই মহুয়ার সংসদ পদ খারিজ করা হয়। মহুয়ার বিরুদ্ধে ‘ঘুষ নিয়ে প্রশ্ন’ বিতর্কের শুরু থেকেই বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে বাকযুদ্ধ শুরু। এমনিতেই গত লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটের ফল নদিয়ার উত্তর এবং দক্ষিণভাগ রাজনৈতিকভাবে ভাগ করে নিয়েছে। দক্ষিণ যদি বিজেপির হয়, উত্তরে অনেকটাই দাপট তৃণমূলের। তাঁকে নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই মহুয়াকে নদিয়া উত্তরের জেলা সাংগঠনিক সভাপতি পদে ফিরিয়ে এনে তার পাশে যে দল আছে সেই বার্তা দিয়ে দেওয়া হয়েছিল তৃণমূলের পক্ষ থেকে। যার জেরে অনেকেই মনে করছেন, এর ফলে কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে আগামী লোকসভায় মহুয়ার টিকিট পাকা। বিজেপি নেতৃত্বও সেটা ধরেই নিজেদের মতো করে ঘুটি সাজাতে শুরু করেছে। সম্প্রতি কৃষ্ণনগরে সভা করতে এসে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তীব্র ভাষায় মহুয়াকে আক্রমণ করেছেন। শুধু তাই নয়, মহুয়াকে হারাতে যে তাঁরা বদ্ধ পরিকর তাও ঘোষণা করেছেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব।
তবে তৃণমূল মহুয়ার পাশে যে ভাবে দাঁড়িয়েছে তাতে বিজেপি মুখে যতই হুঙ্কার দিক না কেন লড়াইটা যে সহজ হবে না তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছে গেরুয়া শিবির।আদানির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলার কারণেই মহুয়ার সদস্যপদ খারিজ হল বলে প্রচার করে তাঁকে ‘শহিদ’ বানানোর চেষ্টা করবে তৃণমূল। তবে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের কারণে মহুয়ার বিরোধী গোষ্ঠী কতটা সক্রিয় হবে তা নিয়েও সংশয় থেকে যাচ্ছে। যদিও চাপড়ার বিধায়ক তথা তৃণমূলের নদিয়া উত্তর সংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান বলেন, "বিরোধীদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা করে চলেছে বিজেপি। তাদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা আজ দেশের মানুষের কাছে স্পষ্ট। বিষয়টিকে নিয়ে জেলা জুড়ে প্রচার তো হবেই। সেই সঙ্গে আমরা আন্দোলনকেও তুঙ্গে নিয়ে যাব।"
তবে বিজেপিও প্রস্তুত। তারাও যে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ তা স্পষ্ট। দলের কিসান মোর্চার রাজ্য সভাপতি মহাদেব সরকার বলেন, "তৃণমূল মানেই যাবতীয় অনৈতিক কাজ আর দুর্নীতি। সবই তো মানুষ দেখছেন। কাকে তাঁরা সংসদ করেছেন বুঝতে পারছেন। লোকসভা ভোটে মানুষ এর জবাব দেবে।"