—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
গত সপ্তাহে বহরমপুর শহর লাগোয়া রাধারঘাট এলাকায় দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে খুন হয়েছেন এক প্রোমোটার তথা তৃণমূল নেতা। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে এ বারে বহরমপুর শহরের ভিতরে এক টোটোচালককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। এ ভাবে সাত দিনের মাথায় বহরমপুর শহর ও শহর লাগোয়া এলাকায় দু’জন খুন হওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। একই সঙ্গে বহরমপুর শহর ও শহর লাগোয়া এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।
তাঁদের অভিযোগ, বাসিন্দারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। গত সেপ্টেম্বরে বিশ্বকর্মা পুজোর রাতে বন্ধুদের হাতে খুন হয়েছেন লরি চালক, মাঝে বহরমপুরের এক জমি ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি। তার পরে গত সপ্তাহে রাধারঘাটে তৃণমূল নেতা খুন হয়েছেন। একের পর এক খুনের ঘটনার বহরমপুরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেআব্রু হয়ে পড়েছে বলে বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছেন।
তবে জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার অভিযোগ ঠিক নয়। এ মাসে বহরমপুরে যে কয়েকটি খুনের ঘটনা ঘটেছে সেগুলির কোনওটার তদন্ত করে পদক্ষেপ করা হয়েছে, কোনটা আবার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বহরমপুরে টোটো চালক খুন হতেই বুধবার সমাজ মাধ্যমে ‘সকলের প্রিয় অধীর চৌধুরী’ নামে একটি পেজে লেখা হয়েছে, ‘‘নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বহরমপুর শহর সহ আশপাশের এলাকা। তাই আবারও অধীর চৌধুরীকেই চাই।’’ বহরমপুরের প্রাক্তন বিধায়ক কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘একের পর খুন সন্ত্রাসের ঘটনায় আতঙ্কিত বহরমপুরের বাসিন্দারা। আমরা চাই পুলিশ রাজধর্ম পালন করে এসব খুন সন্ত্রাস বন্ধ করুক, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করুক।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি শাখারভ সরকার বলছেন, ‘‘সালার থেকে বহরমপুর একের পর খুন দেখে মনে হচ্ছে মুর্শিদাবাদ যেন নব্বইয়ের দশকে ফিরে যাচ্ছে। পুলিশ দলদাসের ভূমিকা পালন না করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করুক। খুনি, দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিক।’’ প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘এ রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। অবিলম্বে রাষ্ট্রপতি শাসন দরকার।’’ তবে বহরমপুরের পুরপ্রধান তৃণমূলের নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অধীর চৌধুরী যথন বহরমপুরে রমরমা অবস্থা, তিনি প্যারালাল প্রশাসন চালাতেন সে সময় খুন সন্ত্রাসে উত্তপ্ত থাকত বহরমপুর। একের পর এক খুন হয়েছে। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে। মঙ্গলবার টোটো ছিনতাইকারীরা একটি ঘটনা ঘটিয়েছে। এতে পুলিশের কোনও গাফিলতি নেই।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর বহরমপুরের পঞ্চাননতলায় জেলা পরিষদ লাগোয়া কারবালা রোডের পাশে খুন হন লরি চালক তাপস হাজরা (৩৪)। ৪ অক্টোবর রাতে বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার লাগোয়া বন্ধুর সরকারি আবাসন থেকে রবি দাস(৪৫) নামে এক জমি ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ১৬ অক্টোবর ভোরে গুলিতে খুন হন প্রদীপ দত্ত(৫৩)।