(বাঁ দিকে) কাজি নজরুল ইসলাম এবং মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশে জাতীয় কবি হিসাবে কাজি নজরুল ইসলামকেই বিবেচনা করা হয়। তবে এত দিন সরকারি ভাবে তা ঘোষণা হয়নি। বৃহস্পতিবার কাজি নজরুলকে জাতীয় কবি হিসাবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। গত ডিসেম্বরে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মণ্ডলীর বৈঠকে এ বিষয়ে প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। এ বার তা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করল ইউনূস প্রশাসন। বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে তাঁকে জাতীয় কবি হিসাবে সম্মোধন করা হয়েছে। অতীতে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতিদের ভাষণেও তা উঠে এসেছে। এ বার সেটিকে সরকারি সিলমোহর দেওয়া হল।
জীবনের শেষ অধ্যায় বাংলাদেশে কাটিয়েছেন কাজি নজরুল। ১৯৭২ সালের মে মাসে কলকাতা থেকে তিনি বাংলাদেশে যান। ১৯৭৬ সালে ঢাকায় প্রয়াত হন তিনি। নজরুলের বাংলাদেশ যাওয়ার তারিখ থেকে তাঁকে বাংলাদেশের জাতীয় কবি ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। বাংলাদেশে যাওয়ার পর ঢাকার ধানমন্ডিতে থাকতে শুরু করেন কবি। ১৯৭৬ সালে মৃত্যুর কয়েক মাস আগে তাঁকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয় সে দেশের সরকার। ওই বছরেই একুশে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে তাঁকে একুশে পদকের সম্মান দেওয়া হয়। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিকর সম্মান। এর কয়েক মাস পরেই ২৯ অগস্ট ঢাকায় প্রয়াত হন কবি।
কাজি নজরুলকে জাতীয় কবি হিসাবে অতীতে বিভিন্ন সময়ে সরকারি এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে সম্মোধন করা হয়েছে বাংলাদেশে। তবে সরকারি ভাবে জাতীয় কবি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি এত দিন। তাঁকে জাতীয় কবি হিসাবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিও দীর্ঘদিন ধরে উঠছে বাংলাদেশে। ২০২২ সালে এ নিয়ে বাংলাদেশের আদালতে মামলাও হয়। আবেদন ছিল, কাজি নজরুলকে জাতীয় কবি হিসাবে ঘোষণা করে গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হোক। তবে বিবিধ কারণে সে বিষয়টি এতদিন হয়ে ওঠেনি। অবশেষে কাজি নজরুলকে জাতীয় কবি হিসাবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হল বাংলাদেশে।