হোটেল সিল।
গরু পাচারের তদন্তে এ বার সিআইডি ঢুকে পড়ল জঙ্গিপুরে। দু’জায়গায় দীর্ঘ প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালায় তারা। তবে এ দিন কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রথমেই ৫টি গাড়ি নিয়ে সিআইডি অফিসারেরা স্থানীয় থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে রঘুনাথগঞ্জ থানার ইছাখালি ভাটুপাড়ায় যান। সেখানেই প্রায় তিন একর জমির উপর তৈরি তিন তলা বিশাল বাড়ি রয়েছে আলম শেখের। তল্লাশি চালিয়ে সেখান থেকে কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক এবং কিছু দলিল ও নথিপত্র সিআইডি আটক করে নিয়ে যায় বলে খবর। এরপর সিআইডি অফিসারেরা উমরপুরে একটি হোটেলে হানা দেন। তিন তলা সেই বিশাল হোটেল এক সময় গমগম করলেও এখন তা বন্ধ দীর্ঘ দিন। তবে সেখানে মার্বেলের ব্যবসা চলে। তিন তলা সেই হোটেলটির মালিক গরু পাচার কাণ্ডে ইডির হাতে ধৃত এনামুলের আত্মীয়েরা বলেই প্রাথমিক ভাবে জানা যায়। কিন্তু পুলিশের খবর, তাদের সকলেই এখন প্রতিবেশী দেশে। সেই হোটেলে সিল করে দেন সিআইডির অফিসারেরা।
২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর রঘুনাথগঞ্জ থানায় একটি গরু পাচার সংক্রান্ত মামলায় (নং ৭৩১/১৯) তদন্ত ভার নিয়েছে সিআইডি। রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ ওই মামলায় চার্জশিটও দিয়েছে ৪০৬, ৪২০ ও পশুর উপর নির্যাতন সংক্রান্ত ধারায়। পুলিশের দেওয়া চার্জশিটের ধারার সঙ্গে অতিরিক্ত ৪০৯ ধারা যুক্ত করে তদন্ত করতেই গত এক মাস ধরে ওই পুরনো মামলার সূত্র জঙ্গিপুরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে সিআইডি।
বৃহস্পতিবার দু’জায়গায় তল্লাশিতে নেতৃত্ব দেন রাজ্য সিআইডির ডিএসপি শিমুল সরকার। তিনি এদিন বলেন, “একটি কেসের তদন্তেই তল্লাশি হয়েছে। কিছু নথিপত্র আটক করা হয়েছে। তবে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি এদিন।”
ইছাখালির ভাটুপাড়ায় প্রায় ঘণ্টা দেড়েক ধরে আলমের বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। আলম দীর্ঘ দিন বাড়ি ছাড়া। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাটুপাড়াতেই জন্ম আলমের। নতুন বাড়ি থেকে মিটার ৫০ দূরে পুরনো বাড়িতেই রয়েছে আলমের বাবা ও অন্যান্য ভাইয়েরা। বছর পাঁচেক আগে বিশাল জায়গা কিনে চারিদিকে পাঁচিল তুলে নতুন তিন তলা বাড়ি তৈরি করে আলম। আগে দুর্গাপরে মশারি ফেরি করত সে। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, পরে এনামুলের সঙ্গে আলাপের পরে অবস্থা বদলায়। গত চার বছরে ইছাখালি এলাকায় প্রচুর জমি কিনেছে আলম, এমনটাই খবর স্থানীয় গ্রামবাসীদের সূত্রে জানতে পেরেছে সিআইডি।
বিজেপির উত্তর মুর্শিদাবাদের জেলা সভাপতি ধনঞ্জয় ঘোষ বলেন, “গরু পাচার নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই ও ইডি তদন্ত করছে। মুর্শিদাবাদেও তৃণমূলের বহু নেতার নাম উঠে আসছে গরু পাচারে। সিআইডি তাদের বাঁচাতে নথিপত্র লোপাট করতেই এই ভাবে হানা দিচ্ছে পরিচিত গরু পাচারকারীদের ডেরায়।”জঙ্গিপুরের তৃণমূল জেলা সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, “সবটাই সি আইডির ব্যাপার। তৃণমূলের সঙ্গে এ সবের কোনও সম্পর্ক নেই।”