দূষিত নদীর কালো জল। রানাঘাটে। নিজস্ব চিত্র
বাংলাদেশের চিনি কারখানার বর্জ্য জল চূর্ণী নদীতে মেশায় নদীর জল দূষিত হচ্ছে বলে অভিযোগ।
গত শনিবার রাত থেকে নদীর জল কালো ও দুর্গন্ধযুক্ত হয়েছে বলে অভিযোগ। স্বাধীনতার পর থেকে প্রায় প্রতি বছরই বিভিন্ন সময় নদীর জল দূষিত হয়, কিন্তু আন্তর্জাতিক এই সমস্যা মেটেনি। সমস্যা সমাধানে কেন্দ্র ও রাজ্যের দায় ঠেলাঠেলিতে ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা।
রানাঘাট মহাকুমার কৃষ্ণগঞ্জ থানার মাজদিয়ার পাবাখালি থেকে মাথাভাঙ্গা নদী দু'ভাগে বিভক্ত হয়েছে। একটি চূর্ণী অপরটি ইছামতি নামে বয়ে গিয়েছে। মাজদিয়া থেকে চূর্ণী রানাঘাটের কাছে ভাগীরথী নদীতে মিশেছে। নদীর প্রবাহ পথ প্রায় ৫৩ কিলোমিটার।
রানাঘাট ১ ব্লকের কলাইঘাটার বাসিন্দা মৎস্যজীবী জীবন হালদার, আশুতোষ পালেরা বলেন, ‘‘একটা সময় নদীতে ৩৫-৪০ রকমের মাছ ছিল। এখানে ঝুঁটি বক, জলমুরগি, বেলে হাঁস, মাছরাঙা দেখা যেত। দূষণের কারণে আজ তা চোখে পড়ে না। অধিকাংশ সময় কচুরিপানা ও কালো জলে ভরে থাকে নদী। বাধ্য হয়ে আমরা রোজগরের বিকল্প পথ বেছে নিচ্ছি।’’
জেলা প্রশাসনের দাবি, কচুরিপানা পরিষ্কার কিংবা নদীর ড্রেসিং করলেই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। কারণ, বাংলাদেশের চিনি কারখানার দূষিত জলে নদীর জল দূষিত হচ্ছে। জীব বৈচিত্রে তার প্রভাব পড়ছে।
রানাঘাটের সাংসদ বিজেপির জগন্নাথ সরকার বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই কেন্দ্র সরকার দূষণ রোধে ৪৫ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। নদীর উৎসস্থলে জল পরিশোধিত করার ব্যবস্থা করলেই দূষণ এড়ানো সম্ভব। অথচ, রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে উদাসীন।’’
আবার নদিয়া জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বাণীকুমার রায়ের কথায়, "দূষণ রোধে আমরা আগেই উদ্যোগী হয়েছিলাম। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসা রাজ্যের পক্ষে সম্ভব নয়। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কারণেই নদীর দূষণ সমস্যা মিটছে না। আর কেন্দ্রের অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি আমার জানা নেই।’’
দূষণের ফল
* পেশা বদলাচ্ছেন মৎস্যজীবীরা।
* বিলুপ্ত হয়েছে বেলে, গলদা চিংড়ি, * মসরুল, কাচকি সহ প্রায় ৩৫ রকম প্রজাতির মাছ।
* জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদ বিলুপ্তির পথে।
* নদীর প্রবাহপথ পরিবর্তন।
* নদীর জলনির্ভর একাধিক রিভার পাম্প বন্ধ।
* দূষিত জলের স্নান করে চর্মরোগ।