কৃষ্ণনগর সার্কিট হাউসে প্রস্তুতি। দিন-রাত কাজ। —নিজস্ব চিত্র।
নির্বাচনী বৈতরণী পেরোতে তৃণমূল কি রাস্তাকেই অবলম্বন করতে চাইছে? মুখ্যমন্ত্রীর এ বারের জেলা সফরে প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসের তালিকা দেখে তেমনই মনে করছে জেলার রাজনৈতিক মহল। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পানীয় জলের একাধিক প্রকল্পের নাম থাকলেও জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, তালিকায় প্রাধান্য পেয়েছে রাস্তা। বিজেপির দাবি, তৃণমূলের বিদায় আসন্ন। এখন এ সব করে কোনও লাভ হবে না।
জেলা পুলিশ-প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ বুধবার কৃষ্ণনগরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সার্কিট হাউজের পুরনো বাড়িতে রাত্রিবাসের পর বৃহস্পতিবার তিনি চলে যাবেন শান্তিপুর। সেখানে প্রশাসনিক বৈঠক সেরে কলকাতায় ফিরে যাবেন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী কোন কোন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন তার একটা তালিকা তাঁর দফতরে পাঠানো হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। শিলান্যাসের প্রাথমিক তালিকায় ৩০টি প্রকল্প আছে। তার মধ্যে ১৯টি রাস্তা তৈরি, সংস্কার বা প্রশস্তিকরণ ও দৃঢ়করণের প্রকল্প রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী প্রায় ৫৩৩টি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। তার মধ্যে বেশির ভাগটাই রাস্তা তৈরি, প্রশস্তিকরণ ও দৃঢ়করণ প্রকল্প আছে। বাকি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে চাকদহ ব্লকের জলসরবরাহ প্রকল্পের পুনর্নবীকরণ, ১০টি সৌরশক্তি চালিত ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প, শান্তিপুরের হরিপুর ও চরসড়াগর এলাকায় ভাগীরথী নদীর ভাঙন প্রতিরোধ, বিভিন্ন ব্লকের বেশ কিছু বিদ্যালয়ের অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ, শৌচালয়, ডাইনিং হল নির্মাণ। পাশাপাশি বীরনগরে প্রায় সাড়ে চার হাজার বারোমেসে খাল পুনর্খনন, নাকাশিপাড়া চক ঘূর্ণীতে ও নবদ্বীপ ব্লকের মায়াপুরে আয়ুষ ওপিডি বা আউটডোর চালু প্রকল্প রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
নদিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি তারান্নুম সুলতানা মীর বলেন, “জেলার অর্থনীতিতে পরিবহণ ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকে। যে কারণে আমাদের সরকার প্রথম থেকেই রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। মানুষের সার্বিক উন্নতির জন্যই রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর পিছনে ভোট বা রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।’’
যদিও নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রীর প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার মিডিয়া আহ্বায়ক সন্দীপ মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘প্রকল্পের উদ্বোধন, শিলান্যাস ইত্যাদি করে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনী ফয়দা তোলার চেষ্টা করছেন। তবে তৃণমূলের বিদায় আসন্ন। তৃণমূল কী বস্তু তা মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। এখন এ সব করে কোনও লাভ হবে না।’’