গবেষণার জন্য যে স্কলারশিপ মিলত তার অর্ধেকেরও বেশি টাকা জমা দিতে হত ‘গাইড’-এর অ্যাকাউন্টে। বাকি টাকায় গবেষণার খরচ চালানো যাচ্ছিল না। তাই জমা টাকা ফেরত চাইতে গিয়েছিলেন। টাকা তো মেলেনি, উল্টে জুটেছে ‘শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন’। গাইড কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক তাপস মজুমদারের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ এনেছেন ওই বিভাগের গবেষক প্রদীপ শিট।
প্রদীপ তাঁর অভিযোগ লিখিত আকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শঙ্করকুমার ঘোষকে জানিয়েছেন। এ ছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধান ও ডিন অব স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার-এর কাছেও অভিযোগ করেছেন।
প্রদীপ জানিয়েছেন, বছর দুয়েক আগে তিনি মাদ্রাজ় আইআইটি থেকে রসায়নে স্নাতকোত্তর হন। ২০১৮ সালের শুরুর দিকে দিকে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগের শিক্ষক তাপস মজুমদারের অধীনে গবেষণা শুরু করেন। কয়েক মাস পর থেকে তিনি ‘ইউনিভার্সিটি রিসার্চ স্কলার’ হিসেবে ১৮ হাজার টাকা পেতে থাকেন। প্রদীপের দাবি, ওই শিক্ষক তাঁকে জানান, গবেষণার জন্য টাকা পাওয়া যাচ্ছে তার থেকে দশ হাজার টাকা ওই শিক্ষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা রাখতে। প্রদীপ যদি গবেষণা শেষ করতে না পারেন তখন টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে। বাকি আট হাজার টাকায় গবেষণা ও থাকা-খাওয়ার খরচ চালানো যাচ্ছিল না। তখন ওই শিক্ষকের কাছে টাকা চান প্রদীপ। অভিযোগ, ওই শিক্ষক টাকা ফেরত দেননি, উল্টে ‘নির্যাতন’ শুরু করেন। চলতি মাসের ১০ তারিখে প্রদীপকে জলের বোতল ছুড়ে মারেন। প্রদীপ বলেন, ‘‘আমার এমনিতেই শারিরীক সমস্যা রয়েছে। তাই ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরে এসে এখানে গবেষণা করছি। স্যারের মার খাওয়ার পর সংজ্ঞা হারাই। সহপাঠীরা জেএনএম হাসপাতালে নিয়ে যায়।’’
প্রদীপের দাবি, ঘটনার পর থেকে তিনি এতটাই আতঙ্কে রয়েছেন যে, ভয়ে গবেষণাগারে যেতে পারছেন না।
অভিযুক্ত শিক্ষক তাপস মজুমদার বলছেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সব মহলে ওই গবেষক অভিযোগ করেছেন, সে সব জায়গায় আগে কথা বলে তবেই আমি এ বিষয়ে মুখ খুলব। তবে অভিযোগ ঠিক নয়।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এখনও পর্যন্ত বিভাগীয় প্রধান বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আমার কাছ থেকে কেউ কিছু জানতে চাননি। তাঁরা জানতে চাইলেই আমি পুরো বিষয়টি জানাব।’’
এ বিষয়ে উপাচার্য শঙ্করকুমার ঘোষকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ধরেননি। জবাব দেননি হোয়াটসঅ্যাপেরও।