তল্লাশি করতে গিয়ে গালি পুলিশকর্তার

গত ৫ জুলাই এবিভিপি-র স্মারকলিপি দিতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে রানাঘাট কলেজের সামনে ব্যাপক গোলমাল হয়েছিল। ইটবৃষ্টির মুখে পড়ে আট পুলিশকর্মী-সহ ১৫ জন আহত হন। ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৩ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানাঘাট শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৯ ০৩:১৫
Share:

ছড়িয়ে পড়া সেই ভিডিয়ো থেকে নেওয়া ছবি। চাকদহে। নিজস্ব চিত্র

রানাঘাট কলেজের গোলমালে পুলিশকে আক্রমণের ঘটনায় এক বিজেপি কর্মীরকে খুঁজতে গিয়ে তাঁর স্ত্রীর প্রতি গালিগালাজ ও অভব্য আচরণের অভিযোগ উঠল এসডিপিও (রানাঘাট) লাল্টু হালদারের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ার পরেই ওই অভিযোগ উঠেছে। যদিও লাল্টুর দাবি, ওই ভিডিয়োয় তাঁকে যে কথা বলতে শোনা যাচ্ছে, তা আসলে তিনি বলেননি। তবে শনিবার রাত পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগও দায়ের হয়নি।

Advertisement

গত ৫ জুলাই এবিভিপি-র স্মারকলিপি দিতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে রানাঘাট কলেজের সামনে ব্যাপক গোলমাল হয়েছিল। ইটবৃষ্টির মুখে পড়ে আট পুলিশকর্মী-সহ ১৫ জন আহত হন। ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৩ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৬ জুলাই, রবিবার গভীর রাতে চাকদহ শহরে ২ নম্বর ওয়ার্ডের রাজবাগান পাড়ায় পলাশ বল নামে ওই বিজেপি কর্মীর বাড়িতে গিয়েছিল পুলিশ। রংমিস্ত্রির ঠিকাদার পলাশ বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ জেলা কমিটির সদস্য। রাত দেড়টা নাগাদ বাহিনী নিয়ে তাঁর বাড়িতে যান এসডিপিও। মিনিট পনেরো তাঁরা সেখানে ছিলেন।

Advertisement

পলাশের স্ত্রী মৌমিতার অভিযোগ, “আগের রাতে চাকদহ থানার পুলিশ আমাদের বাড়িতে এসে ভাল ব্যবহার করেছিল। কিন্তুন সে দিন এসডিপিও খুব খারাপ ব্যবহার করেছেন। বাইরে থেকে দরজা ধাক্কাধাক্কি করেন। দরজা খোলা মাত্র ভেতরে ঢুকে গালিগালাজ করেন। বিভিন্ন ভাবে ভয় দেখান। মোবাইলে আমার স্বামীর একটি ছবিও দেখিয়েছেন। দেখে মনে হল, মুখের সামনে মোবাইল ধরে তোলা হয়েছে।”

এসডিপিও নিজেও মানছেন, “ওই যুবককে বাড়িতে ধরতে তার বাড়িতে গিয়েছিলাম। তাকে না পেয়ে ফিরে এসেছি।’’ তবে তাঁর দাবি, ‘‘পরে ভিডিয়োয় দেখছি, আমার মুখে অন্য কারও কথা বসানো হয়েছে।’’ কোনও ভিডিয়োয় ছবি বা কথা বিকৃত করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এসডিপিও কি কোথাও এ নিয়ে অভিযোগ করেছেন? লাল্টুর দাবি, ‘‘পদস্থ আধিকারিকদের জানিয়েছি। তাঁরাই এ ব্যাপারে যা পদক্ষেপ করার করবেন।” রানাঘাট জেলা পুলিশ সুপার ভিএসআর অনন্তনাগ শুধু বলেন, “ভিডিয়োটা আগে দেখি, তার পর পদক্ষেপ করার কথা ভাবা হবে।”

মৌমিতা বলেন, “সে দিনের পর থেকে দুই ছেলেকে নিয়ে আতঙ্কে রয়েছি। ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারছি না। ছেলেরাও রারবার বলছে, মা পুলিশ তোমায় নিয়ে যাবে না তো?’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমার স্বামী সে দিন রানাঘাট কলেজে গিয়েছিল। কিন্তু কাউকে ইট ছোড়েনি। কেউ দেখাতে পারবে না, তার হাতে ইট ছিল।”

এসডিপিও (রানাঘাট)-এর বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ এর আগেও তুলেছে বিজেপি। তাদের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার দলীয় কর্মসূচির অনুমতি চাইতে গেলে দক্ষিণ জেলা সাংগঠনিক সভাপতি মানবেন্দ্র রায় ও অন্য নেতাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে ধাক্কা মেরে তিনি অফিস থেকে বার করে দিয়েছিলেন। তার প্রতিবাদে রানাঘাট শহরের কোর্ট মোড়ের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধও করেছিল বিজেপি।

মানবেন্দ্র রায় বলেন, “ভিডিয়োটা দেখে আমরা স্তম্ভিত। গুরুত্বপূর্ণ এক জন অফিসার এই ভাষায় কথা বলতে পারেন! ওই যুবনেতার স্ত্রী যে ভাবে লড়াই করতে চাইবেন, আমাদের দল তাঁর পাশে থাকবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement