পুরপ্রধানের পদত্যাগের দাবিতে ধর্নায় পুরপ্রতিনিধিরা। গয়েশপুরে। নিজস্ব চিত্র ।
কল্যাণীর পর এ বার গয়েশপুর। জেলায় তৃণমূল পরিচালিত দুই পুরসভায় পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপ, দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন দলেরই পুরপ্রতিনিধিরা।
মঙ্গলবার কল্যাণী পুরসভায় পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগে পুরসভার সামনে ধর্নায় বসেন তৃণমূলেরই এক পুরপ্রতিনিধি। বুধবার ফের একই ধরনের অভিযোগে ও স্বজনপোষণের প্রতিবাদে গয়েশপুর পুরসভার পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেন তৃণমূলেরই কয়েকজন পুরপ্রতিনিধি। এদিন দুপুরে গয়েশপুর পুরসভা ভবনের নীচে একাধিক দাবিতে ৭, ১৬ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তিন পুরপ্রতিনিধি ধর্নায় বসেন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা পর্যন্ত ধর্না চলবে।
গয়েশপুরের পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অবৈধভাবে মাটি কেটে সেই টাকা আত্মসাৎ করছেন তিনি। এই মাটি কাটার বিরুদ্ধে কল্যাণী মহকুমা শাসককে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন অভিযোগকারীরা। বিক্ষোভকারী পুরপ্রতিনিধিদের আরও দাবি, প্রায় ৫০০ গাড়ি মাটি বিক্রির টাকা আত্মসাৎ করেছেন পুরপ্রধান অর্থ লুটে নিয়েছেন। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি কৌশিক ঘোষ বলেন, "লক্ষ টাকার ওপরে টেন্ডার করলে তা অনলাইনের মাধ্যমে জমা করতে হয়। এই সব নিয়ম না মেনে স্বজনপোষণে ব্যস্ত পুরপ্রধান।" পুরপ্রধানের অবশ্য দাবি, ‘‘মাটি নিয়ে কোনও দুর্নীতি হয়নি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’’
তৃণমূলেরই একাধিক পুরপ্রতিনিধির এ ভাবে দলেরই পুরপ্রধানের বিরোধিতা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেরই বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলে। যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে নারাজ পুরপ্রধান সুকান্ত চট্টোপাধ্যায়। পুরপ্রতিনিধিদের আরও অভিযোগ, ভূমিসংস্কার দফতরের জায়গা পুরপ্রধান গোপনে জ্যোতির্ময় পাবলিক স্কুলের মালিকের কাছে বিক্রি করেছেন। এভাবে বিপুল পরিমাণ টাকা নয়ছয় করেছে পুরসভা। এসবের প্রতিবাদ করলে বিরোধীদের মতো আচরণ করছেন পুরপ্রধান। পাশাপাশি ওয়ার্ডের জন্য নির্দিষ্ট অর্থ বরাদ্দ করা হলেও প্রতিবাদী পুরপ্রতিনিধিদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি স্বপ্না অধিকারীর।
পুরসভার বিরুদ্ধে অভিযোগের উত্তরে পুরপ্রধান সুকান্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওঁরা পুরসভার কোনও উন্নয়নমূলক কাজে সামিল হন না। ওঁদের সমস্ত অভিযোগই ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা।"