শেষ সম্বলটুকু বাঁচানোর তৎপরতা। শমসেরগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র
পুজোর আগেই এল সুখবর। শমসেরগঞ্জ ও ধুলিয়ানে গঙ্গার ভাঙন রোধে কেন্দ্র ৫৩ কোটি ১২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করল। কেন্দ্রের ‘অ্যাডিশনাল অ্যাসিস্ট্যান্স ফ্রম সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট’ নামে তহবিল থেকে ওই টাকা দেওয়া হচ্ছে। স্টেট ডেভলপমেন্ট স্কিমের অধীনে রাজ্যের সেচ দফতর ওই টাকায় চারটি জায়গায় ভাঙন রোধে কাজ করবে। গত বছর ওই এলাকায় দু’ কিমি এলাকার ভাঙন রোধে ২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। নতুন করে আরও ৫৩ কোটি ১২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ইতিমধ্যেই ভাঙন রোধের কাজের জন্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে বলে খবর। আগামী ১২ অক্টোবরের মধ্যেই দরপত্রের প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। কাজ শুরু হবে পুজোর পরেই।
গত বছর থেকে গঙ্গায় ভয়াবহ ভাঙন চলছে শমসেরগঞ্জে। পরে তা শুরু হয় ধুলিয়ান শহরেও। শতাধিক বাড়ি ধসে নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক হাজার মানুষ। গঙ্গার পাড়ে বালির বস্তা ফেলে অস্থায়ী ভাবে ভাঙন আটকানোর চেষ্টা করছে রাজ্য। তবে ৫৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হওয়ায় ভাঙন আটকাতে আরও জোরদার ব্যবস্থা নেওয়া যাবে বলেই মনেকরছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।
শমসেরগঞ্জের দুর্গাপুরে ৩৫০ মিটার এলাকার স্পার বাঁধাতে বরাদ্দ করা হয়েছে ৯ কোটি ২৪ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা। এই কাজ শেষ করতে হবে এক বছর সাত মাসের মধ্যে। শিকদারপুর ও লোহারপুরের এক কিমি এলাকার ভাঙন রোধে বরাদ্দের পরিমাণ ১৪ কোটি ৯২ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা। এ কাজও শেষ করতে বলা হয়েছে ১৯ মাসের মধ্যে। ধুলিয়ান পুরসভার ১৬ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ৫৫০ মিটার ভাঙন রুখতে স্পার বাঁধানোর জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৯ কোটি ৪৫ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা। সে কাজ শেষ করতে সময় দেওয়া হয়েছে দু’ বছর সাত মাস। ধুলিয়ান পুরসভার ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৯৫০ মিটার এলাকায় নদীর পাড় বাঁধানো হবে। আর্থিক বরাদ্দের পরিমাণ ১৯ কোটি ১৫ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা। কাজ শেষ করতে সময় দেওয়া হয়েছে ২ বছর৭ মাস।
রাজ্য সেচ দফতরের বহরমপুরের সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “চারটি কাজেরই দরপত্র টাঙানো হয়েছে। ১২ অক্টোবরের মধ্যে তা জমা পড়বে। ভাঙন রোধে এই চারটি কাজই হচ্ছে স্টেট ডেভলপমেন্ট স্কিমের মাধ্যমে। কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ টাকায় এই চারটি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। রাজ্য অর্থ দফতর স্টেট ডেভলপমেন্ট স্কিমের মাধ্যমে কাজ করার অনুমতিও দিয়েছে।’’ কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে হলেও ৭৫ থেকে ১০০ শতাংশ টাকাটাই কেন্দ্র দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
শমসেরগঞ্জে ভাঙন রোধে এই নিয়ে মোট ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ হল। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, নতুন করে বরাদ্দ অর্থ সঠিক ভাবে খরচ হবে তো? জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমান বলেন, “গঙ্গার ভাঙন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী একাধিক বার কেন্দ্রকে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দিয়েছেন। সংসদে আমরাও দাবি তুলেছি। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্র ও রাজ্য যে শমসেরগঞ্জের ভাঙন নিয়ে ভেবেছে, সেটাই বড় কথা। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য ফরাক্কা ব্যারাজের অব্যবহৃত জমি দেওয়ার জন্যেও দাবি জানিয়েছি। সংশ্লিষ্ট দফতরের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিষয়টি দেখারআশ্বাস দিয়েছেন।”