প্রতীকী ছবি।
কুয়াশার চাদর সরে গিয়ে উষ্ণতার পারদ নামছে ধীর গতিতে। সপ্তাহের শুরুতে অবশ্য পারদ ওঠানামা করেছে ১৮-১৯ ডিগ্রির ঘরে। কনকনে ঠান্ডা না থাকলেও একটু একটু করে জাঁকিয়ে বসছে পৌষের শীত। আর সেই ফাঁকে ভোজনরসিক বাঙালি খুঁজছে ভিন্ন স্বাদ। পিঠে-পুলির গন্ধ ছড়িয়েছে পাড়ায় পাড়ায়। তবে বাড়িতে তৈরির বদলে বর্তমান প্রজন্ম দোকান থেকে পুলি, পিঠে, পাটিসাপটা কিনে খেতে বেশি আগ্রহী। আর মানুষের চাহিদা বেশি থাকায় হরেকরকম মিষ্টির পাশাপাশি নানান রকম পিঠেপুলিও বিক্রি হচ্ছে শহরের দোকানগুলোতে। তবে চাহিদা বেশি থাকলেও দামও বেশি সেসবের। এক একটি দুধপুলির দাম ১০-১২টাকা, পাটিসাপটাও একই দামে বিক্রি হচ্ছে দোকানে।
তবে শীতের পিঠে পুলির সঙ্গে নলেন গুড়ের রসগোল্লা, কাঁচাগোল্লা, রসমালাই পাল্লা দিয়ে বিকোচ্ছে বলেই জানান মিষ্টি বিক্রেতারা। তবে দাম মধ্যবিত্তের হাতের দামের মধ্যেই। প্রতিটি চাপ সন্দেশ ১০টাকা, রসগোল্লা, নলেন গুড়ের কাঁচাগোল্লা প্রতিটি ১২টাকায়। নলেন গুড়ের রসমালাই অবশ্য ২৮০ টাকা কেজি। এক মিষ্টি বিক্রেতা বুবাই সাহা বলেন, “মাঘের শেষ পর্যন্ত অন্য মিষ্টির পাশাপাশি পিঠে পুলিরও বিক্রি বেশি হয়। অন্য বছরের মত এবছর এখনও পর্যন্ত বিক্রি ভালই হচ্ছে।”
এমনিতে বারোমাস এখন সব ধরনের ফলই পাওয়া যায়। শীতের সময় কমলালেবুর চাহিদা বেশি থাকে অন্যবার। এ বছর অবশ্য কমলালেবুর চাহিদা কমেছে বলেই জানান বিক্রেতারা। ইদানীং দার্জিলিংয়ের কমলালেবুর আমদানি শহরে নেই বললেই চলে। উল্টে নাগপুর, পঞ্জাব, রাজস্থান থেকে ট্রাকভর্তি কমলালেবু জেলার পাইকারি বাজারে আসে। সেখান থেকে চলে যায় খুচরো বাজারে। এ বছর কমলালেবুর আমদানি বেশি হয়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। এক পাইকারি বিক্রেতা জানান অন্যবারের তুলনায় ২০-২৩ শতাংশ দাম কমেছে। ২০-২২ কিলো ওজনের এক ক্যারেট নাগপুরের কমলালেবুর পাইকারি দাম পাঁচশো থেকে ছ’শো টাকা। গত বছর দাম ছিল সাতশো থেকে আটশো টাকা।
পাঞ্জাবের হাইব্রিড লেবুর দাম আরও কম। প্রতি ক্যারেট চারশো থেকে পাঁচশো টাকা। গত বছর ছিলো ছ’শো টাকা প্রতি ক্যারেট। খুচরো বাজারে প্রতি লেবু সাত থেকে আট টাকায় বিক্রি হচ্ছে কোথাও আবার তারও কম। এক খুচরো বিক্রেতা সুজিত মণ্ডল বলেন, “মানুষের লেবু কেনার চাহিদা কমেছে। ফলে ব্যবসা চালাতে কম লাভেই তা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।” আবার আপেলের আমদানি কম হওয়ায় এবছর আপেলের দাম গত বছরের তুলনায় বেশি। কাশ্মীরের খারাপ আবহাওয়ার জন্য আমদানি কম হয়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। অনেক সময় দিল্লি ও জলন্ধর হয়েও মুর্শিদাবাদের বাজারে আসে কাশ্মীরি আপেল মাস তিনেক আগে অবশ্য হিমাচল প্রদেশ থেকেও আপেল এসেছে চড়া দামে। খুচরো বাজারে প্রতি কেজি আপেল বিক্রি হচ্ছে একশ থেকে একশো দশের মধ্যে। যেখানে পাইকারি বাজারে দাম ঘোরাফেরা করছে ৯০-১০০ এর মধ্যে।