ঈশ্বর গুপ্ত সেতু। নিজস্ব চিত্র
কল্যাণীর ঈশ্বর গুপ্ত সেতুতে পুলিশের তোলা আদায়ের অভিযোগের সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বুধবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এই নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি এ-ও বলেছেন যে সিআইডি-কে ১৩ এপ্রিল প্রাথমিক রিপোর্ট দিতে হবে। সেই রিপোর্টে সন্তুষ্ট না-হলে মামলাটি সিবিআইয়ের হাতে যেতে পারে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে কোর্টে। পুলিশের বিরুদ্ধে পণ্যবাহী গাড়ি থেকে তোলা আদায়ের ঘটনা নিয়ে মামলা করেছিলেন কল্যাণী পুরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের পুরপ্রতিনিধি লক্ষ্মী ওঁরাও।
লক্ষ্মীর অভিযোগ, কল্যাণী থানার আইসি অনির্বাণ বসুর মদতে সিভিক ভলান্টিয়াররা ওই সেতুতে গাড়ি থেকে টাকা আদায় করেন। বিষয়টি জানতে পেরে পুরপ্রতিনিধি নিজে গিয়ে চার জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে হাতে-নাতে পাকড়াও করেছিলেন। টাকার পাশাপাশি হিসাব লেখার একটি খাতা পাওয়া যায়। রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপারের কাছে এই নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন লক্ষ্মী। টাকা এবং হিসাব লেখার খাতাও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ সুপার এ ব্যাপারে সেই কল্যাণী থানার কাছেই রিপোর্ট চেয়েছিলেন।
বুধবার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ পাওয়ার লক্ষ্মী দাবি করেন, “ইশ্বর গুপ্ত সেতুতে টাকা তোলা নিয়ে বহু বার কল্যাণী থানার আইসি-কে জানিয়েছি। তিনি অভিযোগ নেননি। পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছিলাম। কিন্তু তিনি পদক্ষেপ করেননি। এই অভিযোগ করেছিলাম বলে গত মাসে আমার নিরাপত্তা রক্ষীও তুলে নিয়েছে। তাই হাইকোর্টে মামলা করেছিলাম।”
লক্ষ্মীর অভিযোগ, “টাকা, হিসাব লেখার খাতা এবং যে অভিযোগ করেছিলাম, তার মধ্যে পুলিশ শুধু টাকাটা কল্যাণী আদালতে এসিজেএম কোর্টে জমা দিয়েছে। অভিযোগপত্র জমা দেয়নি। রণজিৎদা (কল্যাণী পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুর কমিটির সম্পাদক রণজিৎ দাস) তথ্য জানার অধিকার (আরটিআই) আইনে আবেদন করেছিলেন।”
হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, এ ক্ষেত্রে অভিযোগকারী এক জন পুরপ্রতিনিধি। তাই তাঁর অভিযোগের সারবত্তা এবং গুরুত্ব আছে বলেই ধরা যেতে পারে। পুলিশের গাফিলতির দিক নিয়েও কোর্টে প্রশ্ন উঠেছে।
সিআইডি তদন্তের নির্দেশ নিয়ে কল্যাণী থানার আইসি অনির্বাণ বসু কোনও মন্তব্য করতে চাননি। রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার কে কন্নন বলেন, “হাই কোর্টের নির্দেশ আমরা হাতে পাইনি। লক্ষ্মী ওঁরাও অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা তদন্ত করে যেখানে রিপোর্ট দেওয়ার তা পাঠিয়ে দিয়েছি। তাতে উনি সন্তুষ্ট হননি।”