—ফাইল চিত্র।
সাধারণ ধর্মঘটে আজ সবচেয়ে নাকাল হতে চলেছেন বাসযাত্রীরা। কেননা বিভিন্ন শ্রমিক ও কর্মচারী সংগঠনের একযোগে ডাকা এই ধর্মঘটে সাড়া দিয়ে তাঁরা বাস চালাবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন বাসকর্মীরা। ফলে আজ, বৃহস্পতিবার নদিয়া জেলায় অধিকাংশ বাস চলবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন বেসরকারি বাস মালিকেরা। তবে ব্যতিক্রম হিসাবে চাকদহের বাস মালিক সমিতি বাস চালানোর চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছে। বেশির ভাগ জায়গায় অটো এবং টোটোও চলবে বলে বুধবার রাত পর্যন্ত খবর।
জেলার ব্যবসায়ী সংগঠনের কর্তারাও জানিয়েছেন, তাঁরা ধর্মঘটের কারণগুলি সমর্থন করছেন। সংগঠনগত ভাবে তাঁরা ধর্মঘটের বিরোধিতা করবেন না। রাস্তায় নেমে জোর করে ধর্মঘটের বিরোধিতা করবে না বলে জানিয়েছে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনও। আরএসএস অনুগামী শ্রমিক সংগঠনও বিরোধিতা করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। ফলে ধর্মঘটের ‘সাফল্য’ নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ধর্মঘটী শ্রমিক সংগঠনগুলি।
সাধারণ ধর্মঘট সফল করতে গত কয়েক দিন ধরে লাগাতার মিটিং-মিছিল গিয়েছে বাম শ্রমিক সংগঠনগুলি। কংগ্রেস অনুগামী শ্রমিক সংগঠনও রাস্তায় নেমেছে। সিপিঅম প্রভাবিত সিটু-র জেলা সভাপতি অমল ভৌমিকের দাবি, “এ বারের ধর্মঘট হবে সর্বাত্মক। আমরা সর্বশক্তি দিয়ে রাস্তায় নেমে মানুষের কাছে অনুরোধ রাখব এই ধর্মঘটে য়োগ দেওয়ার জন্য।”
তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি সুনীল তরফদার বলছেন, “ধর্মঘটের বিষয়গুলি আমরা সমর্থন করছি। কিন্তু আমরা নীতিগত ভাবে ধর্মঘটের বিরুদ্ধে। তাই সব কিছু স্বাভাবিক রাখার জন্য আমরা মানুষকে অনুরোধ করছি।” আররএসএস প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের রাজ্য কমিটির সদস্য মানবেন্দ্র বসু বলেন, “নতুন শ্রম আইনের বিরুদ্ধে আমরা আগেই, গত ২৮ অক্টোবর দেশ জুড়ে ‘প্রটেস্ট ডে’ পালন করেছি। আমরা এই ধর্মঘটের বিরোধিতা করে পথে নামব না।”
নদিয়া জেলা বাস মালিক সংগঠনের সভাপতি কুণাল ঘোষ বলেন, “বাসকর্মীরা কেউ বাস চালাবেন না বলে দিয়েছেন। ফলে বাস চলবে না।” রানাঘাট বাস মালিক সমিতির নেতা মদন দাসও বলেন, “ধর্মঘটের দিন আমরা বাস চালাব না।” যদিও চাকদহ বাস মালিক সমিতির নেতা সমীর ধর বলেন, “আমরা বাস চালাব। এ বার কেউ যদি রাস্তায় বাস আটকে দেয়, তা হলে কিছু করার নেই।”
রানাঘাট রেল বাজার সংযুক্ত ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি পিন্টু সরকার বলেন, “যে ভাবে জিনিসের দাম বাড়ছে, যে সব দাবির ভিক্তিতে ধর্মঘট ডাকা হয়েছে, তা আমরা নৈতিক ভাবে সমর্থন করছি। সেই কারণে বাজার বন্ধ থাকছে।” আবার চাকদহ সেন্ট্রাল ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারন সম্পাদক সুবল দেবনাথ বলেন, “করোনার কারণে এমনিতেই ব্যবসার অবস্থা ভাল নয়। আমরা কাউকে কিছু বলছি না। যার ইচ্ছা সে দোকান খোলা রাখবে।” নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়ের যুগ্ম সম্পাদক গোকুল সাহা বলেছেন, “আমরা ধর্মঘটের কারণগুলি সমর্থন করছি। তবে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ থাকবে কিনা সেটা ব্যবসায়ীদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।”