দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটি। হরিহরপাড়ায়। ছবি: মফিদুল ইসলাম
দুর্ঘটনার মুখে পড়ল যাত্রী নিয়ে যাওয়া একটি বাস। রাজ্য সড়কের উপরেই উল্টে গেল সেটি। শুক্রবার ভোররাতের এই ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৫ জন বাসযাত্রী। হরিহরপাড়ার কুমিরদহ ঘাটএলাকার ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোররাতে বেসরকারি বাসটি নওদার গোঘাটায় একটি বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠান শেষে ৪০-৪৫ জন যাত্রী নিয়ে বহরমপুরের দিকে যাচ্ছিল। কুমিরদহ ঘাট এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার উল্টো দিকে একাধিক দোকানে ধাক্কা মেরে উল্টে যায় বাসটি। আহত হয়েছেন ১৫ জন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর জখম হয়েছেন সাত জন। প্রচণ্ড জোরে আওয়াজ পেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই উদ্ধারকাজে হাত লাগান। আহতদের উদ্ধারের পর চিকিৎসার জন্যে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহতদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। তিন জন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনা যখন ঘটে তখন ঘন কুয়াশা ছিল। পাশাপাশি, চালক মত্ত অবস্থায় বাস চালাচ্ছিল বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। স্থানীয় এক বাসিন্দা বিষ্ণুচরণ হালদার বলেন, ‘‘যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে সেই জায়গায় রাস্তা যথেষ্ট চওড়া। রাস্তার অবস্থাও ভাল। অনুমান করা হচ্ছে, চালক মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন। ঘন কুয়াশার মধ্যে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর জন্যেই দুর্ঘটনা কিনা, খতিয়ে দেখা উচিত পুলিশের।’’ দুর্ঘটনার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাশাপাশি চারটি দোকানঘর। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় হরিহরপাড়া থানার পুলিশ। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাসের চালক ও খালাসি পলাতক। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জানুয়ারি কুমিরদহ ঘাট এলাকাতেই একই রাস্তায় বহরমপুর থানা এলাকায় একটি ম্যাটাডর উল্টে মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। ফের দুর্ঘটনায় বাড়ছে উদ্বেগ। পথ নিরাপত্তা বিষয়ে চালকদের একাংশ এখনও সচেতন নয় কেন, সেই প্রশ্নও উঠছে। এক শ্রেণির চালকের অসেচেতনতার জেরেই একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে বলে দাবি স্থানীয়দের একাংশের। মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্র্যাফিক) পাপিয়া সুলতানা বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার কারণ কী, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ পথ নিয়ম মানতে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা, গাড়ি চালানোর সময় চালক মোবাইল বা হেডফোন ব্যবহার করছে কি না, তা নিয়ে নজরদারি চলছে বলেও দাবি তাঁর।