ওঝার তেলে মৃত বালক

শুক্রবার নাকাশিপাড়ার দোগাছি পঞ্চায়েতের নাংলা গ্রামে বালকটির মৃত্যু হয়। তার নাম জান্নাবি শেখ (১০)। বাবার নাম হলধর শেখ। গ্রাম সূত্রে জানা যায়, তাঁর স্ত্রী আলফিনা মেজো ছেলে জাহাঙ্গিরকে রবিবার সকালে বেথুয়াডহরি কাঁঠালবেড়িয়ার ওঝা আলপনা বিবি ওরফে টুকটুকি বিবির কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নাকাশিপাড়া শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৪৭
Share:

প্রতীকী চিত্র

ঝাড়ফুঁক করতে গিয়ে গায়ে গরম তেল আর ঘি ঢেলেছিল ওঝা। তাতেই প্রাণ গিয়েছে এক বালকের। অন্তত তেমনটাই অভিযোগ তার পরিবারের। মৃত বালকের ভাইও মারাত্মক জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলায় পুলিশ ওঝাকে গ্রেফতার করেছে।

Advertisement

শুক্রবার নাকাশিপাড়ার দোগাছি পঞ্চায়েতের নাংলা গ্রামে বালকটির মৃত্যু হয়। তার নাম জান্নাবি শেখ (১০)। বাবার নাম হলধর শেখ। গ্রাম সূত্রে জানা যায়, তাঁর স্ত্রী আলফিনা মেজো ছেলে জাহাঙ্গিরকে রবিবার সকালে বেথুয়াডহরি কাঁঠালবেড়িয়ার ওঝা আলপনা বিবি ওরফে টুকটুকি বিবির কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। অসুস্থ ছেলেকে সুস্থ করাই ছিল উদ্দেশ্য। তাঁদের অভিযোগ, ওঝা বলেন নগদ সাড়ে দশ হাজার টাকা দিলে ছেলেকে সুস্থ করে দেবেন। রবি থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ঝাড়ফুঁক চলার পরে ওঝা বলে, ছেলেটিকে ‘জিনে ধরেছে’। এর পরে ছোট ছেলে জান্নাবি শেখের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

আলফিনা বুধবার জান্নাবিকে ওঝার কাছে নিয়ে যান। তাঁদের অভিযোগ, রাত থেকে ঝাড়ফুঁকের নাম করে গরম তেল ও ঘি দিয়ে ছেঁকা দেওয়া হয় জান্নাবিকে। তার শরীরের অর্ধেক পুড়ে যায়। আলফিনার অভিয়োগ, সে সময়ে তিনি ছেলের সঙ্গে থাকতে চাইলেও তাঁকে থাকতে দেওয়া হয়নি। দেখা করতেও দেওয়া হয়নি। শুক্রবার সকালে তাঁকে ডেকে ওঝা চার হাজার টাকা দিতে চায়, বলে তার চিকিৎসা করিয়ে নিতে এবং ঝাড়ফুঁকের কারণে যে ছেলের এই হাল হয়েছে তা কাউকে না জানাতে। জানালে তার পরিবারের ক্ষতি হবে বলেও সে ভয় দেখায়।

Advertisement

অসাড় ছেলেকে নিয়ে আলফিনা পাড়ায় ফিরে আসেন। লোকজনের সন্দেহ হতে তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। প্রথমে আলফিনা না বললেও আইনের ভয় দেখাতেই তিনি মুখ খোলেন। এর পরেই পাড়ার লোকজন নাকাশিপাড়া থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে দুই বালককে স্থানীয় বেথুয়াডহরি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। চিকিৎসকেরা জান্নাবি শেখকে ‘মৃত’ ঘোষণা করেন।

গ্রামের আশাদুল মণ্ডল বলেন, “ওর মা দুই ছেলেকে নিয়ে গ্রামে ফিরে এসেও ভয়ে কিছুই বলতে চাইছিল না। এ যুগে এমন ঘটনা ভাবা যায় না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement