মুর্শিদাবাদের সাগরপাড়া থানা এলাকায় বোমা বিস্ফোরণে ভেঙে পড়েছে পাকা বাড়ির একাংশ। —নিজস্ব চিত্র।
মুর্শিদাবাদে বোমা বিস্ফোরণে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার রাতে তীব্র শব্দে কেঁপে ওঠে মুর্শিদাবাদের সাগরপাড়া থানা এলাকার খয়েরতলা গ্রাম। বিস্ফোরণের অভিঘাতে একটি পাকা বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়েছে। সেই ধ্বংসস্তূপ থেকেই তিন জনের ছিন্নভিন্ন দেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, ওই বাড়ির ভিতরে বসে বোমা বাঁধছিলেন তিন জন। অসাবধানতায় বিস্ফোরণ ঘটেছে। যদিও মৃতদের পরিবারের দাবি, তিন জনকে বোমা মেরে খুন করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার রাত ১০টা নাগাদ খয়েরতলায় একটি বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়। সাদা ধোঁয়ায় চারপাশ ঢেকে গিয়েছিল। হুড়মুড় করে ভেঙে পড়েছিল বাড়ির ছাদ-সহ একাংশ। স্থানীয়েরাই তিন জনের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন ধ্বংসস্তূপের মধ্যে। খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থলে যায় সাগরপাড়া থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। এলাকায় তল্লাশি শুরু হয়। নিয়ে যাওয়া হয় বম্ব স্কোয়াডকেও। ঘটনাস্থলে প্রচুর পরিমাণে স্প্লিন্টার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল।
ভাঙা বাড়ি থেকে তিন জনকে উদ্ধার করে রাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতেরা হলেন মামুন মোল্লা, সাগিরুল সরকার এবং মস্তাকিন শেখ। তাঁরা সকলে ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। রাতে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন ডোমকল মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রসপ্রীত সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘তিন জনকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।’’
গ্রাম জুড়ে রাত থেকে চিরুনিতল্লাশি চালানো হচ্ছে। আর কোথাও বোমা মজুত করা আছে কি না, কোনও বোমা সক্রিয় আছে কি না, দেখা হচ্ছে। ধাতব যন্ত্র দিয়ে বোমার খোঁজ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে এই ঘটনায় আর কারা যুক্ত, কী ভাবে বোমা বিস্ফোরণ ঘটল, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা গিয়েছে, বাড়ির ভিতরে বসে হাতবোমা বাঁধছিলেন তিন জন। অসাবধানতায় বিস্ফোরণ ঘটেছে। ওই বাড়ির ভিতর বোমার মশলা মজুত থাকতে পারে বলে পুলিশের ধারণা। মৃতদের পরিবারের লোকজন বোমা বাঁধার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের দাবি, বোমা মেরে তিন জনকে খুন করা হয়েছে। সেই অভিযোগও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।