শিবানী ঘোষ (মাঝে)। নিজস্ব চিত্র।
যাঁদের প্রতিবন্ধকতা পাহাড়প্রমাণ, যাঁদের পক্ষে রোজকার জীবন চালানো শক্ত, তাঁরা কী আদৌ ভোট দিতে যান? দিতে পারেন? ভোটে কি তাঁদের আদৌ উৎসাহ আছে?
শুধু নানা রকমের প্রান্তিক বা কোণঠাসা মানুষ নয়, ভোট নিয়ে ভীত বা নিরুৎসাহী নাগরিকদের উৎসাহ দিতে এ বার নদিয়ার ভোট আইকন হিসেবে বেছে নেওয়া হল ১০০ শতাংশ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বছর বাইশের শিবানী ঘোষকে। বছর বাইশের শিবানী শুধু দৃষ্টিহীন নন, তাঁর মৃদু বৌদ্ধিক প্রতিবন্ধকতাও আছে। তিনি ‘হাইফাংশনিং অটিস্টিক’ বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু এই সব শারীরিক ও বৌদ্ধিক প্রতিবন্ধকতা জয় করে সঙ্গীত শিক্ষা ও চর্চা করে চলেছেন কৃষ্ণনগরের ভাদুড়ি লেনের বাসিন্দা শিবানী। ২০১৯ সালে তিনি সঙ্গীতের জন্য রাজ্য সরকারের ‘রোল মডেল’ নির্বাচিত হন। বাংলা সঙ্গীত মেলাতেও একাধিক বার যোগ দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোকাল মিউজিকে বিএ অনার্সের প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
ভোটারদের বুথমুখী করতে প্রশাসনের একাধিক উদ্যোগের মধ্যে অন্যতম এটি। শনিবার প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, শিবানীর বার্তা ভোটারদের শোনানো হবে। শিবানীর বার্তা— “আমি ভোট দিতে পারি। আপনারাও ভোট দিতে পারেন। সবাই ভোট দিন।” জেলাশাসক পার্থ ঘোষ জানান, প্রতিবন্ধকতাকে তুচ্ছ করা এই ধরনের চরিত্রকেই সাধারণত ভোটের ‘আইকন’ হিসেবে নির্বাচন করা হয়। তাঁর কথায়, ‘‘শিবানীকে সামনে রেখেই এ বার সকলকে ভোটদানে উৎসাহিত করা হবে।’’
আগেই প্রশাসন জানিয়েছিল যে বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও করোনা আক্রান্তেরা চাইলে বাড়িতে থেকেই ভোট দিতে পারবেন। তাঁদের জন্য বাড়িতে ব্যালট পেপার পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। এ দিন সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে ভোটের নিয়মকানুন জানানো হয়। এ দিন কৃষ্ণনগরে সাংবাদিক সম্মেলন করে জেলাশাসক জানান, ‘সি ভিজিল’ অ্যাপ ও ১৯৫০ টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করে নির্বাচন সংক্রান্ত অভিযোগ জানানো যাবে। ইতিমধ্যে আধা সামরিক বাহিনী রানাঘাট পুলিশ জেলা এবং কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার কয়েক জায়গায় রুট মার্চ শুরু করেছে। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লেনদেনের উপরেও নজরদারি করা হবে ।