প্রতীকী ছবি।
বিধানসভা ভোটে বুথ স্তরে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে চাইছে বিজেপি। আর তাই রাজ্য থেকে পাঠানো হয়েছে বেশ কিছু নির্দেশিকা। শুধু তাই নয়, এই সব নির্দেশিকা সম্পূর্ণ রূপে বাস্তবায়িত করার জন্য জেলা নেতৃত্বের তরফে কড়া বার্তাও দেওয়া হয়েছে জেলাগুলিতে। লিখিত আকারে সেই নির্দেশিকা হাতে পাওয়ার পর সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন জেলা নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, এই সব নির্দেশিকা বাস্তবায়িত করতে পারলেই নির্বাচনের সিংহ ভাগ কাজ করা হয়ে যাবে। সেই মতো তাঁরা সেই নির্দেশিকা মণ্ডল কমিটির মাধ্যমে বুথ স্তরে পৌঁছে দিতে শুরু করে দিয়েছেন বলে জেলা নেতাদের দাবি।
এরই মধ্যে, তৃণমূল এবং অন্যান্য দল ছেড়ে বেশ কিছু নেতা কর্মী বিজেপিতে যোগ দিলেন। রবিবার দুপুরে রানাঘাটে বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার কার্যালয়ে তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেওয়া হয়। এ দিন বিজেপিতে যোগদানকারীদের মধ্যে আছেন ফুলিয়ার তৃণমূল কর্মী চঞ্চল চক্রবর্তীও। এক সময়ে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই এর রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন পেশায় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক এই নেতা। বছর তিনেক আগে তিনি দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। রানাঘাট উত্তর পশ্চিমের বিধায়ক শঙ্কর সিংহের ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। তবে তৃণমূলে এই মুহুর্তে কোনো পদে ছিলেন না তিনি। এ ছাড়াও এ দিন শান্তিপুরের সিপিএমের প্রাক্তন কাউন্সিলর শিক্ষক রাধাকান্ত বিশ্বাসও বিজেপিতে যোগ দেন।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত নির্বাচনগুলিতে রাজ্যে ধারাবাহিক ভাবে ভোট বাড়লেও বুথ স্তরে বিজেপির সংগঠন যে এখনও সে ভাবে মজবুত হয়নি, তা স্বীকার করে নেন দলের নেতারাই। অনেক বুথে এখনও কমিটিই তৈরি করে উঠতে পারেনি বিজেপি। তার উপর যদি করোনার কারণে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে ভিড় কমাতে বুথ সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হয়, তাহলে সেই সংখ্যাটা আরও বেড়ে যাবে বলে ধরেই নিয়েছেন নেতাদের অনেকেই। কিন্তু বিধানসভা ভোটে তৃণমূলকে টেক্কা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে গেলে বুথ স্তরের সংগঠনকে যে আরও শক্তিশালী করতে হবে সেটাও বুঝতে পারছেন তাঁরা। আর সেই কারণেই এ বার বুথ স্তরের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছে বিজেপি। আর সেটা করতে গিয়ে রাজ্য থেকে নির্দিষ্ট ভাবে ২৩ দফা নির্দেশিকা পাঠিয়ে দিয়েছে।
সেই মতো মণ্ডল স্তরের সংগঠন ও মোর্চা পদাধিকারীদের পাঁচটি করে বুথের দায়িত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি, মিস্ড কল সদস্যপদ কর্মসূচির সত্যতা যাচাই করে তবে আপডেট করতে হবে। যাঁরা মিস্ড কল দিয়ে সদস্য হয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সক্রিয় ভাবে দলীয় কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।
পাশাপাশি বিগত দু’টি করে লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের বুথ ভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। শুধু তাই নয়, সামাজিক স্থিতি বা অবস্থান অনুযায়ী বুথ কমিটি গঠন করতে হবে। প্রতিটি বুথ কমিটিতে সদস্যদের মধ্যে তফসিলি জাতি-উপজাতি ও মহিলাদের রাখতে হবে। প্রতিটি বুথে ভোট কেন্দ্র গঠন করে সদস্য-কর্মীদের ভোট গ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। প্রতিটি বুথে ২ থেকে ৩ জনকে বেছে নিতে হবে, যাঁরা সব সময় বুথকে সক্রিয় রাখবেন। শুধু তাই নয়, প্রমুখ তৈরি করে প্রতিটা বুথে প্রধানমন্ত্রীর মন কি বাত অনুষ্ঠান শোনার ব্যবস্থা করতে হবে। স্বামী বিবেকানন্দ থেকে শুরু করে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জন্মদিন পালন
করতে হবে।