বঙ্কিম রোড। —ছবি : সংগৃহীত
দলের কর্মীদের নানা জল্পনার অবসান ঘটিয়ে কার্যত ‘অজ্ঞাতবাস’ থেকে বেরিয়ে এলেন চাকদহের বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ। ফেসবুকে পোস্টে বঙ্কিম জানিয়েছেন, তিনি চিকিৎসার জন্য কলকাতায় গিয়েছেন। চিকিৎসক তাঁকে কিছু দিন বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এবং ক’দিন তাঁর ফোনও বন্ধ থাকবে। এর মধ্যে সিআইডি তাঁর বাড়িতে যায়নি বলেও তিনি দাবি করেছেন।
এই পোস্ট দিলেও বুধবার দুপুরে অবশ্য বিধায়ককে ফোনে পাওয়া যায়। তিনি জানান, চিকিৎসার জন্য গত শনিবার সকালেই কলকাতা গিয়েছেন। মঙ্গলবার ডাক্তার দেখিয়েছেন। দু’এক দিনের হরিণঘাটার বড় জাগুলিয়ায় নিজের বাড়িতে ফিরবেন। মঙ্গলবার রাত ১১টা নাগাদ ফেসবুকে পোস্ট একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনে তাঁর গাড়ি থেকে নামার ও একটি কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার ছবি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে বিভিন্ন সূত্রে ‘খবর’ ছিল, কল্যাণী এমসে নিয়োগ দুর্নীতির মামলার তদন্তে গত শুক্রবার রাতে সিআইডি তাঁর বাড়িতে গিয়েছে। ঘটনাচক্রে, সে দিন ভোরেই খাদ্য দুর্নীতি মামলায় মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করেছিল ইডি। সে দিন দুপুরে রানাঘাটে দলের একটি অবরোধ কর্মসূচিতে শেষ বার দেখা যায় এক সময়ে বাম আমলের মন্ত্রী, বর্তমান বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিমকে। পরিবারের তরফে জানানো হয়েছিল, বিকালে বাড়ি ফিরে রাতেই তিনি চিকিৎসার জন্য কলকাতায় রওনা দিয়েছেন।
এ দিন বিধায়ক দাবি করেন, এর মধ্যে সিআইডি তাঁর বাড়িতে যায়নি। তাঁকে কোনও চিঠিও দেওয়া হয়নি। আদালতের নির্দেশ আছে, তদন্তের জন্য তাঁকে ডাকতে হলে অন্তত ১৫ দিন আগে চিঠি দিতে হবে। এর আগে তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে এবং বাড়িতে গিয়ে সিআইডি চার বার তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে।
বিধায়ক জানান, হৃদরোগের কারণে গত ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে। তার কিছু দিন আগেই সিআইডি তাঁকে চিঠি দিয়ে ডেকেছিল। অস্ত্রোপচারের পর, গত ২৯ সেপ্টেম্বর তিনি ভবানী ভবনে যান।
বঙ্কিমের কথায়, “সিআইডি অফিসারদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে এসেছি। সেই সময়ে অফিসারেরাই আমায় বলেন, ‘এই অবস্থায় এলেন কেন? আমাদের চিঠি দিয়ে জানালেই পারতেন।’ তাঁরা যথেষ্ট সৌজন্য দেখিয়েছিলেন।”
গত কয়েক দিন ধরেই বঙ্কিম ঘোষ কোথায় আছেন, তা নিয়ে দলের মধ্যে জল্পনা চলছিল। দলের নেতারা এ নিয়ে পরস্পরবিরোধী কথাবার্তা বলতে থাকায় নিচুতলার কর্মীরা আরও বিভ্রান্ত হন। তার উপর বিধায়কের মোবাইল টানা বন্ধ ছিল। গত শনিবার ও সোমবার বড় জাগুলিয়ার বাড়িতে গিয়েও তাঁর দেখা মেলেনি। তবে তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের অন্যেরা ছিলেন। এ দিন দুপুরে অবশ্য বাড়ির দরজা তালাবন্ধ ছিল।