—প্রতীকী চিত্র।
মুর্শিদাবাদের ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের বহু আসনেই প্রার্থী দিতে পারল না কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। জেলা পরিষদ বা পঞ্চায়েত সমিতিতে তারা অপেক্ষাকৃত বেশি মনোনয়ন দিতে পারলেও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে তারা মোট আসনের এক তৃতীয়াংশেরও কম আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদের দু’টি আসনে জয় পেয়েছিল বিজেপি। সেখানে বাম, কংগ্রেসের ঝুলি ছিল শূন্য। সেই বিজেপি মুর্শিদাবাদে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে সে ভাবে প্রার্থী দিতে না পারায় দলের অন্দরে শোরগোল পড়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, জেলার গ্রামীণ এলাকায় দলের সাংগঠনিক অবস্থান নিয়েও। ভোট পর্বে এই বিষয়টি জেলার রাজনৈতিক মহলেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
যদিও বিজেপির মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ জেলা সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদের মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলায় আমরা এ বারে রেকর্ড পরিমাণ প্রার্থী দিতে পেরেছি। এর আগে পঞ্চায়েত ভোটে আমরা এত সংখ্যক প্রার্থী দিতে পারিনি।’’ পাশাপাশি তাঁর দাবি, ‘‘জেলার সংখ্যালঘু অধ্যুষিত অনেক এলাকায় আমাদের সাংগঠনিক শক্তি দূর্বল রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে শাসকদলের সন্ত্রাস। সন্ত্রাস না থাকলে প্রার্থীর সংখ্যা আরও বাড়ত। এ বারে আমরা সংখ্যালঘুদের মধ্যে থেকেও বহু প্রার্থী দিতে পেরেছি।’’ যা শুনে জেলা তৃণমূল নেতা অশোক দাস বলেন, ‘‘কোথাও কোনও সন্ত্রাস হয়নি। গত বিধানসভা নির্বাচনে ওরা হাওয়াতে দু’টি আসনে জয় পেয়েছিল। মুর্শিদাবাদে ওদের সংগঠন বলতে কিছুই নেই। সেটারই প্রতিফলন ঘটেছে এ বারের ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা পরিষদের মোট ৭৮ টি আসনের ৭৬ টিতে প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। পঞ্চায়েত সমিতির ৭৪৮টি আসনের মধ্যে ৩২৫টিতে তারা প্রার্থী দিতে পেরেছে। যা মাত্র ৪৩ শতাংশ। এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ৫৫৯৩টি আসনের মধ্যে ১৫৯৩টি আসনে বিজেপি প্রার্থী দিতে পেরেছে। এই পরিসংখ্যান মাত্র মোট আসনের মাত্র ২৮ শতাংশ।
বিজেপির প্রার্থী দেওয়ার এই চিত্র দেখে রাজনৈতিক কারবারিরা বলছেন, মুর্শিদাবাদের গ্রামীণ এলাকায় বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি অনেকটাই দূর্বল। অনেক জায়গায় বুথ কমিটি পর্যন্ত এখনও গড়ে তুলতে পারেনি তারা। যার জেরে গ্রামীণ এলাকায় গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে মাত্র ২৮ শতাংশ আসনে তাঁরা প্রার্থী দিতে পেরেছে। পঞ্চায়েত এলাকার ভোটার হলেও শহর বা ব্লক সদরে বসবাসকারী বিজেপির নেতা-কর্মীরা পঞ্চায়েত সমিতি বা জেলা পরিষদে লড়াইতে এগিয়ে এসেছেন। যার জেরে এই দুটি স্তরে অপেক্ষাকৃত বেশি মনোনয়ন দিতে পেরেছে।