—প্রতীকী চিত্র।
অযোধ্যার রামমন্দির থেকে চলে এসেছে ঘি ও হলুদ মেশানো চাল বা ‘অক্ষসত’। সেই চাল জেলার প্রতিটি হিন্দু পরিবারে পৌঁছে দিয়ে রামমন্দিরের জন্য আমন্ত্রণ জানাবে সংঘ পরিবার।
এই কাজ শেষ করতে জেলা থেকে একেবারে গ্রামস্তর প্রর্যন্ত ধাপে ধাপে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ কমিটি। মনে করা হচ্ছে, লোকসভা ভোটের আগে এই কর্মসূচির মাধ্যমে জনসংযোগ সেরে নিতে চাইছে বিজেপি নেতৃত্ব। পাশাপাশি এই অক্ষসত পৌঁছে দিতে যে সাংগঠনিক পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে ভোটের কাজে তাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। যার মোকাবিলা তৃণমূলের কাছে সাংগঠনিক ভাবে বড়সড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।
অযোধ্যার রামমন্দির তৈরি নিয়ে দেশ জুড়ে হিন্দুদের একটা বড় অংশের মধ্যে উন্মাদনা তৈরি হয়েছে বলে দাবি বিজেপির। লোকসভা ভোটের আগে সেই উন্মাদনা আরও বাড়িয়ে ভোটে তার সুফল পেতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। পাল্টা রামমন্দিরের উদ্বোধন নিয়ে লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ।
বিজেপি রাজনৈতিক ভাবে কৌশল নিলেও আরএসএস তাদের সাংগঠনিক শক্তির বা ‘নেটওয়ার্ক’-এর মাধ্যমে রামমন্দির তৈরির আবেগ প্রতিটি হিন্দুর মধ্যে জারিত করতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করেছে। ১ থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিটি হিন্দু পরিবারের কাছে রামমন্দির থেকে পাঠানো চাল, রামমন্দিরের ল্যামিনেশন করা ছবি, অযোধ্যার রামমন্দিরের ‘ইতিহাস’ ও উদ্বোধনের দিন হিন্দু পরিবারের সদস্যরা কী ভাবে পালন করবেন তার একটি নির্দেশিকা সংবলিত লিফলেট পৌঁছে দেবেন সংঘ পরিবারের সমস্ত শাখা সংগঠনের কর্মীরা। সেই কাজ করতে জেলা, ব্লক, অঞ্চলের পাশাপাশি গ্রামস্তরে রাম ‘জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র কমিটি’ তৈরি হয়েছে।
আরএসএস সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের প্রায় দু’শোটি সামাজিক শাখা সংগঠনের মধ্যে ৫০টি সংগঠন এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে সক্রিয়। নদিয়ায় সংখ্যাটা প্রায় দশ। বিশ্বহিন্দু পরিষদ, বজরং দল, আরোগ্য ভারতী, ভারতীয় মজদুর সংঘ, শিক্ষক সংঘের মতো সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে জেলা স্তরে কমিটি তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি ব্লক স্তরে দু’জন করে জেলা কমিটির সদস্য বা ‘পালক’ সহ প্রতিটি অঞ্চল থেকে দু’জন করে পালক নিয়ে কমিটি তৈরি করা হয়েছে। আবার সংশ্লিষ্ট এলাকার দু’জন করে ব্লক পালক ও সেই অঞ্চলের গ্রামগুলি থেকে দু’জন করে গ্রাম পালক নিয়ে অঞ্চল কমিটি এবং গ্রামপালক তার গ্রামের ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি তৈরি করেছেন। কমিটিতে ন্যূনতম সাতজন করে সদস্য থাকছেন।
সংঘ পরিবার সূত্রে খবর, প্রতিটি জেলায় এক ঘড়া করে ঘি ও হলুদ মেশানো চাল পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি পরিবারে ২০ গ্রাম করে চাল পৌঁছে দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হবে। সে ক্ষেত্রে এত চাল কোথা থেকে আসবে? সংঘ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় পাঠানো চালের সঙ্গে প্রয়োজন আরও চাল মিশিয়ে ব্লকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ব্লকও সেই চাল প্রয়োজনে আরও চালের সঙ্গে মিশিয়ে অঞ্চলে পৌঁছে দেবে। একই ভাবে অঞ্চলও সেই চাল গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দেবে। ৬ ডিসেম্বর নদিয়া জেলায় সেই চাল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ১০ ডিসেম্বর সেই চাল ব্লকে ব্লকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। পয়লা জানুয়ারির আগে যা অঞ্চল গ্রাম স্তরে পৌঁছে দেওয়া হবে। (চলবে)