প্রতীকী ছবি
পুরভোটের মুখে ফের গুরুত্বপূর্ণ পদে ফেরানো হল বিজেপির নবদ্বীপ শহর দক্ষিণ মণ্ডলের প্রাক্তন সভাপতি শশধর নন্দীকে। তাঁকে নবদ্বীপ শহর দক্ষিণ মণ্ডলের নির্বাচন কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদিকার দায়িত্ব অপর্ণা নন্দী এবং সম্পাদকের দায়িত্ব নবীন চক্রবর্তীকে দেওয়া হয়েছে।
২০১৬ থেকে টানা তিন বছর মণ্ডল সভাপতি ছিলেন শশধর। গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে আচমকা পদ খোয়াতে হয়েছিল তাঁকে। রাতারাতি তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন দলের তৎকালীন নদিয়া উত্তর জেলার সভাপতি মহাদেব সরকারের ঘনিষ্ঠ শিবশঙ্কর মণ্ডল। সে সময়ে তিনি ছিলেন বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু রদবদলের ছ’মাস কাটতে না কাটতে শশধরকে ফের নবদ্বীপ দক্ষিণ মণ্ডলের দায়িত্বে ফিরিয়ে আনা হল। প্রায় দু’দশক তৃণমূলের একচেটিয়া প্রাধান্যের পরে গত লোকসভা ভোটে নবদ্বীপ পুর এলাকায় প্রায় দশ হাজার ভোটে এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। ‘তৃণমূলের দুর্গ’ নবদ্বীপে বিজেপির এ হেন সাফল্যে অন্যদের সঙ্গে শশধর নন্দীরও ভূমিকা ছিল। বিশেষ করে দক্ষিণ অঞ্চলে বিজেপির দলীয় সংগঠন বাড়াতে তিনি সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন। কিন্তু লোকসভা ভোটের ওই সাফল্য নবদ্বীপের বিজেপি নেতারা নিজেদের ব্যক্তিগত কৃতিত্ব বলে মনে করতে শুরু করেন। প্রবল গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার হয় দল।
সেই সময়ে বিজেপির যুব মোর্চার নেতা শিবশঙ্কর মণ্ডলের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে শশধর ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। গত ৭ জুলাই পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতে শশধরকে মণ্ডল সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় শিবশঙ্করকে আনা হয়। কিন্তু এর পাঁচ মাসের মাথায় সোশ্যাল মিডিয়ায় শিবশঙ্করের সঙ্গে বিজেপির নবদ্বীপ গ্রামীণ মণ্ডলের মহিলা মোর্চার এক নেত্রীর একাধিক অন্তরঙ্গ ছবি ফাঁস হয়ে যায়। ৯ ডিসেম্বর রাতে শিবশঙ্কর পদত্যাগ করেন। তাঁকে এবং ওই নেত্রীকে সমস্ত পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরের কয়েক মাস নবদ্বীপ দক্ষিণ মণ্ডলে সভাপতি পদ শূন্যই ছিল।
ইতিমধ্যে নদিয়া জেলা বিজেপিতে আমূল পট পরিবর্তন হয়েছে। মহাদেব সরকারকে উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে আনা হয় আশুতোষ পালকে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ফের গুরুত্ব বাড়তে থাকে শশধরের। তাঁকে মণ্ডল সভাপতি করা না হলেও আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, পুর নির্বাচনের মুখে নির্বাচন কমিটির আহ্বায়ক মানে বকলমে তিনি সভাপতিই হলেন। শশধর শুধু বলেন, “আমি দলের অনুগত সৈনিক। দল যখন যা দায়িত্ব দেবে তা পালন করব। আপাতত পুরভোটে নবদ্বীপ দক্ষিণ মণ্ডলের সব ওয়ার্ডে বিজেপিকে জেতানোই প্রধান কাজ।”