ফাইল চিত্র।
কলেজ ছাত্রী খুনের ঘটনায় ৭৪ দিন পর আদালতে চার্জশিট জমা দিল বহরমপুর থানার পুলিশ। সেই চার্জশিট বিচার প্রক্রিয়ার জন্য গ্রহণ করেছে বহরমপুর আদালত। আগামী ২৫ জুলাই চার্জ গঠন করে আদালতে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হবে শুনানি।
আদালতে মোট ৩৮৩ পাতার চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ। মোট ৫৪ জনকে সাক্ষী হিসাবে দেখানো হয়েছে। খুনে অভিযুক্ত এক জনই। তিনি সুশান্ত চৌধুরী। তাঁর নামে ৩০২ ধারা ও অস্ত্র আইনের ২৮ নম্বর ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। চার্জশিটে পুলিশ জানিয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরে পরিকল্পনা করেই ঠান্ডা মাথায় সুতপা চৌধুরীকে খুন করেছে সুশান্ত। সুশান্ত যে ভাবে খুনের পরিকল্পনা করেছিল, তার বিস্তারিত বর্ণনাও রয়েছে চার্জশিট। এই চার্জশিট নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সুশান্তের আইনজীবী পীযূষ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘এফআইআর-এ শুরুতে সুশান্তের নাম ছিল না। পরে নাম যোগ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রক্রিয়া মেনে তা সুশান্তের নাম এফআইআরে যোগ করা উচিত ছিল, তা হয়নি।’’ অন্য দিকে, সরকার পক্ষের আইনজীবী আরিফুজ্জামান বলেন, ‘‘পুলিশ যথেষ্ট তৎপরতার সঙ্গে তদন্ত শেষ করে চার্জশিট জমা দিয়েছে। মেয়েটির পরিবার দ্রুত ন্যায়বিচার পাবে, আশা করছি।’’
৭৪ দিনের মাথায় চার্জশিট জমা পড়ায় খুশি সুতপার পরিবার। আনন্দবাজার অনলাইনকে বাবা স্বাধীন চৌধুরী বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগেই চার্জশিটের ব্যাপারে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করি। তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গেও কথা হয়। দ্রুতই চার্জশিট জমা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন ওঁরা। আশা করছি, দ্রুত আমার মেয়ের খুনি যথোপযুক্ত শাস্তি পাবে।’’ তবে চার্জশিট নিয়ে সুশান্তের পরিবারের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
গত ২ মে ভরসন্ধ্যায় বহরমপুরের কাক্যায়নীর গলিতে বহরমপুর গার্লস কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুতপাকে তাঁর মেসের সামনের রাস্তাতে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে খুন করে সুশান্ত। ওই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শমসেরগঞ্জের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে সুশান্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরায় সুশান্ত স্বীকারও করে নেয়, পরিকল্পনা মাফিক সে-ই সুতপাকে খুন করেছে। এর পর তদন্ত নেমে বিভিন্ন সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহ করে, সাক্ষীদের গোপন জবানবন্দি নিয়ে আড়াই মাসের মাথায় চার্জশিট জমা দিল পুলিশ।