ফাইল চিত্র।
বহরমপুরের কলেজ ছাত্রী খুনে আজ, শুক্রবার পুলিশ আদালতে চার্জশিট জমা দিতে পারে বলে একটি সূত্রে খবর। সুতপা চৌধুরী নামে ওই কলেজ ছাত্রী খুন হওয়ার ৭৩ দিনের মাথায় চার্জশিট জমা পড়বে সেক্ষেত্রে।
ঘটনার তদন্ত শুরু হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা দেওয়াই নিয়ম। সুতপার বাবা স্বাধীন চৌধুরীর দাবি, পুলিশ তাঁকে জানিয়েছে, আজ তারা চার্জশিট জমা দিতে চলেছে। চার্জশিটে খুনের ঘটনায় ধৃত সুশান্ত চৌধুরী ছাড়া অন্য কারওকে অভিযুক্ত করা হয়নি বলে পুলিশ সুত্রে জানা যায়। তবে মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুবিমল পাল বৃহস্পতিবার এ নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানাননি। তিনি বলেন, “প্রক্রিয়া শেষ হলেই চার্জশিট জমা দেওয়া হবে।”
গত ২ মে ভরসন্ধ্যায় বহরমপুরে শহিদ সূর্য সেন রোডের একটি মেসবাড়ির সামনে নৃশংস ভাবে খুন হন মালদহের বাসিন্দা তথা বহরমপুর গার্লস কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুতপা। তদন্তে নেমে ওইদিন রাতেই পুলিশ মালদহের বাসিন্দা সুশান্ত চৌধুরী নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে শমসেরগঞ্জ থানা এলাকা থেকে। পুলিশের দাবি, জেরায় খুনের কথা স্বীকারও করে নেয় ধৃত। তাকেই কলেজ ছাত্রী খুনে অভিযুক্ত করেই চার্জশিট জমা পড়তে চলেছে বলে বহরমপুর থানা সূত্রে খবর। ধৃতের বিরুদ্ধে বেআইনি ধারাল অস্ত্র রাখার অভিযোগও এনেছে পুলিশ।
প্রায় একশো পাতার চার্জশিটে অন্য কাউকে অভিযুক্ত করা হয়নি। তদন্ত চলাকালীন নিহত কলেজ ছাত্রীর ঘনিষ্ঠ দুই বন্ধুকে থানায় ডেকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। তদন্ত চলাকালীন আদালতে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন সুতপার বন্ধু তথা জঙ্গিপুর কলেজের এক ছাত্র। সুতপা ও সুশান্তের এক বন্ধুর বিরুদ্ধে সুতপার বাবা স্বাধীন অভিযোগ জানালেও খুনের ঘটনায় তাঁর যুক্ত থাকার কোনও প্রমাণ পায়নি পুলিশ। খুনের ঘটনার পর ওইদিন রাতেই বহরমপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মেস মালিক অসীমকুমার দত্ত। সেখানে তিনি সুশান্তের নাম উল্লেখ না করে এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরহাতে সুতপার খুন হওয়ার কথা লিখিত ভাবে জানিয়ে ছিলেন। সেই তথ্য তুলে গত বুধবার সুশান্তের আইনজীবী পীযূষ ঘোষ মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সুমনা গড়াইয়ের কাছে সুশান্তের জামিনের আবেদন করেছিলেন। আদালতে তিনি জানান, এফআইআরে অভিযুক্ত হিসেবে নাম না থাকা সত্ত্বেও তাঁর মক্কেল জেল হেফাজতে রয়েছে। তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকের কাছে তদন্তের কেস ডায়েরি চেয়ে পাঠানোর আবেদন করার কথাও তিনি জানান। সেই আবেদনের বিরোধিতা করেন সরকারপক্ষের আইনজীবী বিশ্বপতি সরকার।
দু’পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক ওইদিন সুশান্তের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। ধৃতকে ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠান বিচারক। বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের ২৫ নম্বর সেলের আসামি সুশান্তের পরীক্ষা দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।