বাবার সঙ্গে শেষ বার কথা হয় সোমবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ। নিজস্ব চিত্র।
স্বপ্ন ছিল স্কুল শিক্ষিকা হবে মেয়ে। মেয়েকে পড়তে পাঠিয়েছিলেন বহরমপুর। কিন্তু কল্পনাও করতে পারেননি এমনটাও হতে পারে। বহরমপুরের গোরাবাজারে ‘প্রেমিকের’ হাতে খুন হয়ে যাওয়া সুতপার বাবা স্বাধীন চৌধুরী এ সব বলতে বলতেই কেঁদে ফেললেন। সবে মাসের শুরু। এই সময় তো মেয়েকে মেসের জন্য টাকা পাঠাতে হয়!
সোমবার সন্ধ্যায় গোরাবাজার এলাকায় খুন হন কলেজছাত্রী সুতপা। ছাত্রীর বাবা জানাচ্ছেন, সন্ধ্যে ৬টা নাগাদ মেয়েকে মেসেজ করেন। তিনি জানতে চেয়েছিলেন, এই মাসে কত টাকা পাঠাতে হবে...। কথা শেষ হল না। আবার কান্নায় ভেঙে পড়লেন স্বাধীন। একটু সামলে নিয়ে বললেন, ‘‘মেয়ের এমন পরিণতি হবে ভাবতেও পারিনি।’’
মালদহের একটি স্কুলের শিক্ষকতা করেন স্বাধীন। আর ইংরেজ বাজারের বাসিন্দা সুতপা বহরমপুর গার্লস কলেজে উদ্ভিদবিদ্যা নিয়ে পড়তেন। পড়াশোনার জন্য বাড়ি ছেড়ে বহরমপুরে কত্যায়নীর গলিতে একটি মেসে থাকতেন। সেখানে সোমবার খুন হন তিনি। স্বাধীন জানান, ছেলেটিকে (সুতপার প্রেমিক বলে নিজেকে দাবি করছেন যিনি) চিনতেন তিনি। বলেন, “মেয়ে জানিয়েছিল, ছেলেটি রাস্তাঘাটে ওকে ফলো করত, ভয় দেখাত। আমরা শুনে ইংরেজ বাজারের স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানাই। মেয়েকে এ ভাবে হারাব, ভাবতেই পারিনি।’’
সোমবার খুনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সামশেরগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীকে। তিনিও মালদার বাসিন্দা। পুলিশি জেরায় সুশান্ত জানান, ’২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সুতপাকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। কিন্তু গত চার মাস আগে তাঁদের সম্পর্কে চিড় ধরে। আর সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে চাননি সুতপা। এমনটাই দাবি সুশান্তের। তিনি জানান, অন্য আর এক জনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল। অন্য দিকে, সুশান্তর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে মানসিক অবসাদের ওষুধ পেয়েছে পুলিশ।