—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
নদিয়া-মুর্শিদাবাদের অন্যতম অর্থকরী ফসল হল পাট। আর সেই পাটের দাম গত কয়েক বছর থেকে খুবই কম পাচ্ছেন কৃষকেরা। যার জেরে পাট চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। এ বছরও বৃষ্টির ঘাটতির জেরে চাষিরা পাট জাঁক দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন। অনেকেই পুকুরে জলসেচ দিয়ে পাট জাঁক দিচ্ছেন। আর সেই পাট বিক্রি করতে গিয়ে পর্যাপ্ত দাম পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে গ্রাম গঞ্জে খুচরো বাজারে কুইন্টাল পিছু ৪৫০০-৪৮০০ টাকা দামে পাট বিক্রি হচ্ছে। কৃষকদের দাবি, এই দামে পাট বিক্রি করে ক্ষতি হচ্ছে। চাষিরা যখন পাট চাষ নিয়ে এমন সমস্যার মুখে পড়েছেন তখন পশ্চিমবঙ্গের পাটচাষিদের সমস্যা সমাধানে কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন বহরমপুরের সাংসদ তথা ভারতীয় ক্রিকেটের প্রাক্তন তারকা ইউসুফ পাঠান।
বুধবার সংসদে পাট চাষের সমস্যার কথা যেমন তুলে ধরেছেন, তেমনই পাটচাষি ও শ্রমিকদের কথা মাথায় রেখে এ বিষয়ে নজর দেওয়ার দাবি করেছেন ইউসুফ। তিনি এ রাজ্যের পাটচাষিদের কথা সংসদে তুলে ধরায় খুশি হয়েছেন মুর্শিদাবাদের চাষিরা।
বুধবার ইউসুফ পাঠান সংসদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের পাট চাষ এবং পাট চাষের সমস্যার বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ, নদিয়া ও হুগলিতে পাট চাষ হয়। এই পাট চাষ হাজার হাজার পরিবারের জীবন যাপনে সহায়তা করে। কিন্ত পাট চাষ নিয়ে বর্তমানে নানা সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার বাড়ায় কিছু জুট মিল বন্ধ হয়েছে। পাটের দাম কম পাওয়ায় কৃষকরেরা সমস্যায় পড়েছেন। সরকার প্লাস্টিকের ব্যাগের ব্যবহার কমিয়ে পাটের ব্যাগ ব্যবহারের সুপারিশ করেছে। কিন্তু সব ঠিকঠাক দেখা হচ্ছে না। সরকারকে অনুরোধ করছি পাট চাষ এবং জুট মিল বন্ধ হওয়া রুখতে নজর দিতে হবে।’’ সংসদে ইউসুফ আরও বলেন, ‘‘কৃষকদের পাট চাষে উৎসাহ দেওয়ার সরকার উদ্যোগী হোক। পাটের ন্যায্য দাম যেমন কৃষকেরা পান এবং পাট শ্রমিকদের যাতে মজুরি বাড়ে তা সরকারকে দেখতে হবে।’’
বহরমপুরের পাট চাষি ফিরোজ মণ্ডল বলছেন, ‘‘গত বার পাটের দাম ভাল পাইনি। তবুও দাম বাড়বে এই আশায় এ বারেও পাট চাষ করেছি। বৃষ্টি কম হওয়ায় অনেক কষ্টের মধ্যে দিয়ে পাট চাষ করছি। কিন্তু এ বারেও পাটের দাম নেই। নতুন পাট উঠছে। অথচ সেই পাট কুইন্টাল পিছু পাঁচ হাজার টাকার নীচে রয়েছে। এত কম দামে পাট বিক্রি হলে খরচ উঠবে না। কুইন্টাল পিছু ৬৫০০ থেকে ৭০০০ টাকা হলে কিছুটা লাভ হবে। তাই আমরা চাই সরকার এবিষয়ে নজর দিক।’’ ডোমকলের খুচরো পাট ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘‘পাটের দাম কম। আমরাও কম দামেই কিনতে বাধ্য হচ্ছি।’’