জমি উচ্ছেদ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয়েছে।
দু’ দফায় বহরমপুর শহরের তিন জায়গায় সরকারি জমি থেকে উচ্ছেদের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলেন স্থানীয় মহকুমাশাসক। আপাতত ওই তিনটি জায়গার মধ্যে একটি জায়গায় দখলদার উচ্ছেদ করা হচ্ছে। বাকি দু’টি জায়গার মধ্যে একটিতে উচ্ছেদ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয়েছে। অন্যটিতে বাড়ির মালিক মহকুমাশাসককে লিখিত ভাবে শোকজ়ের উত্তর দিয়েছেন। ফলে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এবং শোকজ়ের দাবি খতিয়ে না দেখা পর্যন্ত ওই দু’টি জায়গা থেকে দখলদার উচ্ছেদ করতে পারবে না বলে মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
রবিবার বহরমপুরের মহকুমাশাসক প্রভাতকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘লালদিঘির পাশের অবৈধ নির্মাণকারীদের তরফে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করা হয়েছে। আগামী ১৪ জুন হাই কোর্টে সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা। আমরাও প্রস্তুতি নিচ্ছি শুনানিতে অংশ নেওয়ার জন্য। তবে ঋত্বিক সদনের কাছের অবৈধ নির্মাণকারীদের তরফে কোনও জবাব আসেনি। সোমবার সেখানকার নির্মাণ ভাঙার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দখলদার উচ্ছেদ করা হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘হিরু হালদারদের তরফে দেওয়া জবাব পেয়েছি। তাঁরা সেচ দফতরের জমি ব্যবহারের লাইসেন্স পেয়েছেন বলে জবাবে জানিয়েছেন। তবে সেচ দফতর প্রকৃতই ওঁদের বসবাসের জন্য লাইসেন্স দিয়েছে কি না, তা সেচ দফতরের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। সেই বিষয় খতিয়ে দেখার পরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’
সম্প্রতি বহরমপুরের লালদিঘির কাছে এবং শহরের ঋত্বিক সদনের কাছে অবৈধ ভাবে তৈরি হওয়া দোকানঘর ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয় প্রশাসন। এই দুই জায়গায় গত ২৬ মে-র মধ্যে এ বিষয়ে অবৈধ দখলদারদের কাছে জবাব চাওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া, শহরের কুঞ্জঘাটায় থাকায় বহরমপুর পুরসভার বিরোধী দলনেতা হিরু হালদারদের বাড়ি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। হিরু মহকুমাশাসকের বিজ্ঞপ্তির জবাব দিয়েছেন। লালদিঘির কাছে বিতর্কিত দোকান ঘরের মালিকেরা মহকুমাশাসকের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। ঋত্বিক সদন এলাকার বিতর্কিত নির্মাণ নিয়ে মহকুমাশাসকের কাছে কোনও উত্তর আসেনি। মহকুমা প্রশাসন সূত্রের খবর, ঋত্বিক সদনের কাছে বিতর্কিত নির্মাণ ভেঙে ফেলার বিষয়ে সোমবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। তার পরে সেই নির্মাণ ভেঙে দেওয়া হবে। অন্যদিকে, হিরু হালদাররা মহকুমাশাসককে চিঠিতে জানিয়েছেন, সেচ দফতর লাইসেন্স দেওয়ায় সেখানে তাঁরা বাড়ি নির্মাণ করেছেন এবং তাতে সেচ দফতর বা রাজ্য সরকার আপত্তি জানায়নি। ফলে সেখানে তাঁদের বাড়ি আইনত ভাঙা যায় না। প্রশাসন সূত্রের খবর, হিরুরা লাইসেন্সের দাবি করলেও তার স্বপক্ষে কোনও নথি পেশ করেননি। তাই সেচ দফতরের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে মহকুমা প্রশাসন প্রয়োজনীয়পদক্ষেপ করবে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, বহরমপুর-সহ বেশ কিছু জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে খাস জমিতে নির্মাণ হয়েছে। তা উচ্ছেদ করা উচিত। একই সঙ্গে পুনর্বাসনের বিষয়টিও মাথায় রাখা দরকার।