প্রতীকী ছবি
গত কয়েক বছরে বারবার বদলে গিয়েছে পুরপ্রধান। শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে একাধিক বার। থমকে গিয়েছে নানা উন্নয়নের কাজ। এর মধ্যেই লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে বীরনগর শহরে উত্থান হয়েছে বিজেপির। পুরভোটের আগে সেখানে উন্নয়নের কাজে জোর দিয়েই ক্ষত ঢাকতে চাইছে শাসক দল।
বীরনগর শহরে দলের অভ্যন্তরীন কোন্দল নিয়ে বারবার বিব্রত হতে হয়েছে শাসক দলকে। পুরপ্রধান ও উপপুরপ্রধানের দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে কোন্দল বিড়ম্বনা বাড়িয়েছে নেতৃত্বের। এই টানাপড়েনের মধ্যেই ছাপ পড়েছে উন্নয়নের কাজেও। ফেরত গিয়েছে ‘স্মার্ট সিটি’ প্রকল্পের টাকা। ২০১৭ সালে কয়েক জন কাউন্সিলরের দলবদলের পরে এখন ১৪ জন কাউন্সিলরই শাসক দলের। কিন্তু এর মধ্যে সেখানে ফুটেছে পদ্মও। লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে বীরনগর শহরে বিজেপির চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল।
সম্প্রতি বীরনগরে কাউন্সিলরদের নিয়ে এক বৈঠকে এই কোন্দলে রাশ টানতে কড়া বার্তা দেন দলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শঙ্কর সিংহ। বেশ কিছু নিয়মও বেঁধে দেওয়া হয়। আগে এক তরফে যেমন কাজে বাধার অভিযোগ উঠেছে, অন্য তরফ তেকে অভিযোগ এসেছে উন্নয়নের কাজে তাঁদের যুক্ত না-করার। জেলা নেতৃত্ব জানিয়েছেন, সব কাউন্সিলরকে সঙ্গে নিয়েই কাজ করার কথা বলা হয়েছিল। এখন উন্নয়নের দিকে জোর দেওয়ার দিকেই ঝোঁক পড়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে শহরে বেশ কয়েকটি কংক্রিটের রাস্তা তৈরি এবং সংস্কারের পাশাপাশি কিছু নতুন রাস্তা তৈরির কাজে হাত দেওয়া হচ্ছে। কয়েকটি কাজের টেন্ডার ডাকা হয়েছে, বাকি কিছু কাজের ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ১৮ হাজার ফুট কংক্রিটের রাস্তা তৈরি এবং তা বাদেও ৩৬টি পাকা রাস্তা তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে পুরসভা। শুরু হচ্ছে ২০টি উচ্চ বাতিস্তম্ভ বসানোর কাজও। নিকাশি নালা এবং শিশু উদ্যান সংস্কারের কাজও করা হবে। খুব দ্রুত এই সমস্ত কাজ শুরু হবে।
এই উদ্যোগে ফল মিলবে কি?
বীরনগরে শাসক দলের দুই যুযুধান শীর্ষ নেতার দাবি, পুরবোর্ড তাঁদেরই থাকবে। পুরপ্রধান পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিভিন্ন রাস্তা তৈরির এবং সংস্কারের কাজ শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই উন্নয়ন তো শহরবাসীর জন্যই। মানুষ এখানে তৃণমূলকেই চাইছে।” আর উপপুরপ্রধান গোবিন্দ পোদ্দার বলেন, “সমস্যা কিছু নেই। সবাই এক সঙ্গে কাজ করছে। এখানে বিজেপি বলে কিছু নেই। ওরা মানুষকে বিভ্রান্ত করেছিল। এখানে তৃণমূলেরই বিজয় পতাকা উড়বে।”
বিজেপির দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অশোক চক্রবর্তী অবশ্য পাল্টা দাবি করেন, ‘‘বীরনগরের মানুষ এদের চেনেন। এ সবে তাঁরা ভুলবেন না, নিঃশব্দ বিপ্লব ঘটাবেন।’’