ঘড়ি ও ফুল। নিজস্ব চিত্র
গাঁধীগিরির মাধ্যমে অনিয়মের প্রতিবাদ। শুক্রবার সকালে এই পন্থা নিতে দেখা গেল কল্যাণীর ভারপ্রাপ্ত বিডিও সুরঞ্জন বিশ্বাসকে। দেরি করে অফিসে আসা কর্মীদের হাতে গোলাপ ফুল তুলে দিলেন তিনি।
শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটা। কয়েক জন কর্তাকে নিয়ে বিডিও অফিসে ঢোকার মুখেই দাঁড়িয়ে ছিলেন সুরঞ্জনবাবু। তাঁর হাতে কয়েকটি গোলাপ ফুল। দু-পাশে দাঁড়ানো দু’জন হাতে ধরা পোস্টারে বড় বড় করে লেখা ছিল, ‘সঠিক সময়ে অফিসে আসার জন্য ধন্যবাদ!’ এক জনের হাতে ছিল বিশাল একটা দেওয়াল ঘড়ি।
দেরি করে অফিসে আসা কর্মীদের প্রত্যেকের হাতে একটি করে গোলাপ ফুল তুলে দিয়েছেন বিডিও, এবং মুখে বলেছেন, ‘অফিসে আসর জন্য ধন্যবাদ!’ কর্মীরা এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনায় অপ্রস্তুতের একশা। প্রায় ঘণ্টাখানেক এ হেন গোলাপ ফুলের গাঁধীগিরি চলে।।
বিডিওর কথায়, ‘‘দূরদূরান্ত থেকে মানুষ কত রকম সমস্যা নিয়ে আমাদের কাছে আসেন। কিন্তু আমি দেখছিলেন, বেশির ভাগ কর্মী সময়ে অফিসে আসছেন না। মানুষকে এসে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অফিসের কাজেরও ক্ষতি হচ্ছে। আমার কাছে অনেকে অভিযোগ জনিয়েছেন। যখন দেখলাম, দেরিটাকেই অনেকে অভ্যাসে বা নিয়মে পরিণত করেছেন তখন এই পন্থার কথা মাথায় এল। এতে যদি অন্তত লজ্জা পেয়ে তাঁদের বোধোদয় হয়। এমন ভুল কর্মসংস্কৃতিতে একটা ধাক্কা দেওয়ার দরকার ছিল।’’
এ দিন বিডিও অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে শিমুরালি গ্রাম পঞ্চায়েতের কুমারপুরের বাসিন্দা বিকাশ সাঁতরা বলেন, “আমার একটা কৃষক বন্ধুর কার্ডের খুব প্রয়োজন। সে বিষয়ে কথা বলতে এসেছিলাম। এসে দেখছি, কোনও কর্মী অফিসে আসেননি। বাধ্য হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।”
দেরি করে আসা কর্মীদের অবশ্য বক্তব্য, “আমার সময়ে অফিসে আসতে চাই। কিন্তু ট্রেনের জন্য দেরি হয়। আমরা কাজে ফাঁকি দিই না।” দেরি এড়াতে আগের ট্রেনে কেন তাঁরা আসেন না প্রশ্ন করলে অবশ্য তাঁরা কোনও
জবাব দেননি।