কেটে ফেলা হয়েছে মাটি। — ফাইল চিত্র।
সুতি ১ ব্লকে গভীর রাতে মাটি কাটা রুখতে গিয়ে বিডিও চাপের মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠল। বিডিও এইচ এম রিয়াজুল হক অবশ্য দাবি করেছেন, “চাপ যাই থাক, সুতি ১ ব্লকের কোথাও অবৈধ ভাবে মাটি কাটতে দেব না। পুলিশকে বলা হয়েছে আরও তৎপর হতে। ব্লকের কোথাও মাটি কাটা হলে আমায় জানান, ব্লক অফিস এখন থেকে নিয়মিত নজরদারি চালাবে।” ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘বিডিও সাহস দেখিয়েছেন, তাই তাঁর উপর শাসক দলের চাপ আসবে এটাই তো স্বাভাবিক।”
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার মাঝ রাতে। মাটি কাটা হচ্ছে বুঝতে পেরে বিডিও জমির আল দিয়ে টর্চ হাতে ছুটতে শুরু করেন। পিছনে পুলিশ ও ব্লক অফিসের জনা চারেক কর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ার। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে গাড়ি ও টর্চের আলো ফেলে ঘোর অন্ধকারে তল্লাশি চালালেও বিঘের পর বিঘে জমিতে কাটা মাটির গভীর গর্ত আর একটি খালি ট্রাক্টর ছাড়া মিলল না কিছুই। বিডিও অবৈধ মাটি কাটার বিরুদ্ধে আহিরণ পুলিশ ফাঁড়িতে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন শুক্রবার।
সূত্রের খবর, এই ঘটনার পর থেকেই শুরু হয়েছে প্রশাসনের উপর চাপ। সুতি ১ ব্লকে অন্তত ১৪টি ইটভাটা রয়েছে। বাম-কংগ্রেসের অভিযোগ, শাসক দলের নেতা ও সদস্যেরাই নামে বেনামে সে সবের মালিক।কংগ্রেসের তারিকুল বলেন, “বহু বার ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে অভিযোগ করেছি। কিছুই হয়নি। কারণ সব ইটভাটা শাসক দলের নেতাদের। এক নেতার আবার ৪-৫টি ইটভাটা আছে নামে, বেনামে। পুলিশ, প্রশাসন তাই চুপ।’’ সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অসিত দাস বলছেন, “৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের দু’পাশেই জমি মাফিয়াদের দাপট। প্রশাসন থেকেও নেই।” জঙ্গিপুরের জেলা তৃণমূল সভাপতি খলিলুর রহমান অবশ্য বলছেন, “দলের লোকই হোক আর যেই হোক বেআইনি কাজ করলে প্রশাসনের উচিত কড়া ব্যবস্থা নেওয়া। দলের কোনও নেতা এতে হস্তক্ষেপ করবেন না। মাটি মাফিয়াদের দাপটে বদনাম হচ্ছে রাজ্য সরকারের। বিডিও যে ব্যবস্থা নিয়েছেন, একেবারে ঠিক পদক্ষেপ।”
সম্প্রতি রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লকের ইছাখালিতে মাটি মাফিয়াদের হাতে আক্রান্ত হন এক রাজস্ব পরিদর্শক।