Lottery Prize

অশান্তির ভয়ে লুকিয়ে রাখা লটারির টিকিটে কিস্তিমাত, রাতারাতি কোটিপতি ডোমকলের নাপিত রবিউল!

মুর্শিদাবাদের ডোমকলের রবিউ শেখের গুমটি দোকান আছে। সেখানে লোকের চুল-দাড়ি কাটেন তিনি। যেদিন খদ্দের খুব ভাল হয়, সে দিন আয় হয় দেড়শো টাকা। নইলে একশোর নীচেই থাকে দৈনিক রোজগারপাতি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

ডোমকল শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:২৬
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সারা দিনে মেরে কেটে আয় করেন শ’দেড়েক টাকা। কিন্তু নেশা এমনই যে সেই উপার্জনের বেশির ভাগই খরচ করতেন লটারির টিকিট কিনতে। এ নিয়ে সংসারে নিত্যদিন অশান্তি। বিদ্যুতের বিল মেটাতে না পারায় বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। সন্তানদের গৃহশিক্ষকের মাসিক বেতনটুকুও মাঝেমাঝে দিতে পারেন না বলে ঝামেলা হয়েছে। তবু প্রতি দিন লটারির টিকিট কেটে গিয়েছেন মুর্শিদাবাদের ডোমকলের বাসিন্দা রবিউল শেখ। পেশায় নাপিত রবিউল অশান্তির ভয়ে এ বারের লটারির টিকিট কেনার কথাটা বাড়ির কাউকে বলেননি। সেই লুকিয়ে রাখা টিকিটেই ভাগ্য খুলে গেল তাঁর। সোমবার রাত পর্যন্ত গরিব নাপিত রবিউল মঙ্গলবার হয়ে গেলেন কোটিপতি। যে লটারির টিকিট কাটা নিয়ে এত অশান্তি, তার জন্যই খুশির বান ডেকেছে পরিবারে। সকাল থেকে রবিউলের বাড়িতে উপচে পড়ছে প্রতিবেশীদের ভিড়।

Advertisement

মুর্শিদাবাদের ডোমকলের রঘুনাথপুর মালিপাড়া গ্রামের রবিউলের গুমটি টোকান আছে। সেখানে লোকের চুল-দাড়ি কাটেন তিনি। যেদিন খদ্দের খুব ভাল হয়, সে দিন আয় হয় দেড়শো টাকা। নইলে একশোর নীচেই থাকে দৈনিক রোজগারপাতি। এ হেন রবিউল ১৭ সেপ্টেম্বর এলাকার একটি দোকান থেকে ৬০ টাকায় ‘এক সিরিজ়’ লটারির টিকিট কাটেন। আবার এ নিয়ে ঝগড়া হবে বলে বাড়ির কাউকে কিচ্ছুটি বলেননি। রাতে মিলিয়ে মিলিয়ে দেখছিলেন টিকিট নম্বর। সোমবার রাতে এক জন ফোন করে বলেন, ‘‘লটারি লেগেছে তোর।’’ প্রথমে এই কথা বিশ্বাসই করতে পারেননি রবিউল। বার বার নম্বর মিলিয়ে দেখতে থাকেন। ভাগ্যের চাকা ঘুরেছে বুঝতে পেরে মঙ্গলবার সেই টিকিট নিয়ে হাজির হন থানায়। পুলিশি নিরাপত্তায় সুরক্ষিত করা হয় রবিউলের লটারি টিকিট।

সদ্য কোটিপতি হওয়া রবিউলের কথায়, ‘‘কত অশান্তি সহ্য করেছি। তবুও স্বপ্ন দেখা ছাড়িনি। বাড়ির লোকের ভয়ে টিকিট কেটে লুকিয়ে রাখতাম। টিকিট মেলাতে গিয়ে এক কোটি টাকার পুরস্কার পেয়ে গেলাম। ওপরওয়ালাকে যে কী ভাবে ধন্যবাদ দেব!’’ ছেলের লটারি জেতা নিয়ে রবিউলের মা নাবেহার বিবি বলেন, ‘‘টিকিট কাটার নেশায় সংসারের দিকে কোনও খেয়াল ছিল না ওর। চিন্তায় ঘুম হত না আমার। কী ভাবে নাতিনাতনির পড়াশোনা করাবে, সেটাই ভাবতাম। এত দিনে ওর সপ্ন সত্যি হয়েছে। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement