সুতির বংশবাটি গ্রামে রাজরাজেশ্বরী পুজো। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
বসন্তের সেই অকাল দুর্গা পুজোয় বৃহস্পতিবার থেকেই মেতে উঠেছে সুতির বংশবাটী গ্রাম। ঘরে ঘরে আত্মীয় কুটুম্বের ভিড় গ্রামের পরিবেশটাকেই উৎসবে ভরিয়ে তুলেছে ।
প্রথা মতো সরস্বতী পুজোর পরদিন শীতলা ষষ্ঠী থেকেই শুরু হয়েছে বংশবাটীর রাজরাজেশ্বরী দুর্গাপুজোর। শেষ মাঘী পূর্ণিমায়। শরতের দুর্গাপুজো নয়, বসন্তের এই দুর্গোৎসবকেই প্রধান উৎসব মানেন বংশবাটীর মানুষ।
কত বছরের প্রাচীন এই পুজো তা ঠিক জানা নেই গ্রামের বাসিন্দাদের। প্রবীণ বাসিন্দা গৌতম মজুমদার বলছেন, ‘‘নানা গল্প কাহিনী ছড়িয়ে আছে রাজ রাজেশ্বরীকে ঘিরে। সে এক ভয়ঙ্কর ঝড়ের মুখে পড়েছিল গ্রাম। আশপাশের একাধিক গ্রাম জুড়ে ঝড়ের তাণ্ডবে দিশেহারা মানুষ। জনশ্রুতি, তখন গ্রামেরই ‘রাজুয়া দিঘি’ পুকুর থেকে দু’হাত বাড়িয়ে ঝড়কে রুখে দিয়ে বংশবাটীকে রক্ষা করেছিলেন দেবী রাজরাজেশ্বরী। এই বিশ্বাসে চিড় ধরেনি এখনও।’’
পুজোর পুরোহিত নিতাই চক্রবর্তী বলেন, “আনুমানিক ৩০০ বছরের পুজো আগে ছিল ভট্টাচার্য বাড়ির পারিবারিক পুজো। জনশ্রুতি, পাশেই রাতুরি গ্রামের এক শাঁখারি দুপুর রোদে যাচ্ছিলেন রাজুয়াদিঘির পাশ দিয়ে। তখন দিঘিতে স্নানরতা এক তরুণী তার কাছে শাঁখা পরেতে চান। অনেক অনুরোধের পরে তাকে শাঁখা পরিয়েও দেন তিনি। তরুণী শাঁখারিকে ভট্টাচার্য বাড়ি থেকে তার মেয়ে শাঁখা পরেছে বলে পয়সা চেয়ে নিতে বলেন। ভট্টাচার্য বাড়িতে গিয়ে শাঁখারি পয়সা চাইতেই আকাশ থেকে পড়েন পরিবারের নিঃসন্তান কর্তা। ছুটে যান পুকুর পাড়ে। দেখেন হাতে শাঁখা সহ এক তরুণী ধীরে ধীরে নেমে যাচ্ছেন জলের মধ্যে। এরপরেই সরস্বতী পুজোর পরদিন থেকে নিজের বাড়িতেই বসন্ত কালেই তিনি শুরু করেন দুর্গা পুজো। এই পুজো পরে বারোয়ারি পুজো হিসেবে চালু হয়।’’