Brahmapur

গলির ভিতরে টোটোর রেট আলাদা

বহরমপুর পুর এলাকার ১৮০টি রাস্তা। তার মধ্যে ১২০ থেকে ১২৫টি রাস্তায় কোথাও পিচ উঠে ক্ষতবিক্ষত কোথাও গভীর পাহাড়ি গর্ত!

Advertisement

বিদ্যুৎ মৈত্র

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২০ ০৫:৫৫
Share:

ছবি: সংগৃহীত

বহরমপুর কোর্ট স্টেশন কিংবা মোহনা বাসস্ট্যাণ্ড থেকে টুকটুক চালককে বহরমপুর শহরের কোনও পাড়ার ভিতরে যেতে বললেই আপনাকে শুনতে হবে, ‘‘ওই পাড়ার মধ্যে রাস্তায় গাড়ি চালাতে গেলে গাড়ির যে ক্ষতি হবে তা পুষিয়ে দেবেন তো?” একটু বেশি ভাড়া দেওয়ার শর্তে রাজি হলেও বহরমপুর পুরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা বলছেন “বেশি ভাড়ায় রাজি হলেই তো হবে না, জেনেবুঝে ওই রাস্তায় টুকটুকে চেপে যাতায়াত করলে আগে থেকে হাসপাতালের টিকিকটাও কেটে রাখতে হবে!” কারণ আর কিছুই নয়, রাস্তার অগম্য অবস্থা।

Advertisement

বহরমপুর পুর এলাকার ১৮০টি রাস্তা। তার মধ্যে ১২০ থেকে ১২৫টি রাস্তায় কোথাও পিচ উঠে ক্ষতবিক্ষত কোথাও গভীর পাহাড়ি গর্ত! কোনও পাড়ায় খোঁজ নিয়ে, শেষ কবে রাস্তায় পিচ পড়েছে তার হিসেব মিলছে না, কোথাও বা ভাঙা কংক্রিটের উপরে ইট ফেলে স্থানীয় বাসিন্দারাই একটা চলনসই পথ করে নিয়েছেন। বহু জায়গায় রাস্তার বুকচিরে জলের পাইপ লাইন বসানোর কাজ হয়েছে বটে, কিন্তু সেই ফাটল আর মেরামত করা হয়নি। খাতায় কলমে বহরমপুর পুরসভা ‘বি’ ক্যাটাগরি। অথচ সেই মতো পরিষেবা থেকে বঞ্চিত থেকে গিয়েছেন পুর বাসিন্দারা। নিয়ম মেনে শহরের মূল রাস্তার উন্নতি যতখানি হয়েছে ততখানিই অবনতি হয়েছে শহরের অলিগলির। কাশিমবাজার এলাকার কান্তনগর, শ্রীপুর রোড, খাগড়ার বড়মুড়ির ধার, মোল্লাগেড়ের ধার, জেলেপাড়া, জগদম্বা থেকে যদু দত্ত লেন, রাজাগঞ্জ মোড় থেকে বাঙালপাড়া, মণীন্দ্র রোড, হীরালাল সোনার লেন, স্বর্ণময়ীর চুড়ামণ চৌধুরী লেন— রাস্তাগুলি সম্পর্কে যত কম বলা যায় ততই ভাল। বহরমপুরের ২, ৫, ৬, ৯, ১০, ১৬, ২২, ২৩, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের রাস্তার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। তবে, ভোট-পাখি আসতেই বাসিন্দাদের মন ভোলাতে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর চেনা প্রতিশ্রুতি দেওয়া। গোরাবাজার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রীতি সাহা বলছেন, “এই এলাকার রাস্তা বলে কিছু নেই। সেই রাস্তায় কিছু দিন আগে পিচের প্রলেপ পড়েছে। বর্ষা আসলে আবার এই রাস্তায় পাথর বেড়িয়ে যাবে। অথচ প্রত্যেক বছর ভোটের সময় নেতারা প্রতিশ্রুতি দিতে কসুর করেন না।’’ ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষ্ণেন্দু মণ্ডল বলেন “শহরের প্রতিটি রাস্তায় বর্যা থেকে গ্রীষ্ম— পিচের কোনও ক্ষতি হবে না, এমনই আশ্বাস দিয়েছিলেন কাউন্সিলর। কিন্তু সে সব কতার কথা। আদতে সে সবই স্বপ্ন!’’ ২২ নম্বর ওয়ার্ডের চুড়ামণ চৌধুরী লেনের এক ব্যবসায়ী বলছেন “গত পাঁচ বছরে এক বারও এই রাস্তায় পিচের প্রলেপ পড়েনি।” ২৩ নাংওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর বর্তমান বিজেপি নেতা কাঞ্চন মৈত্র অবশ্য বলছেন, “পুর প্রধানকে বহুবার বলেছি। কিন্তু কে কার কথা শোনে!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement