শ্যামল দাসের মৃত্যুতে স্তব্ধ তাঁর স্ত্রী সুপর্ণা। —নিজস্ব চিত্র।
দিন দুয়েক আগে একমাত্র মেয়ের জন্মদিন উপলক্ষে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয়েছিল। মেয়েকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। সেই শেষ বারের মতো কথা। বাড়ি ফেরার কথা ছিল নবান্ন উৎসবের সময়। কিন্তু তা আর হয়ে উঠল না। শনিবার মণিপুর-মায়ানমার সীমান্তে জঙ্গি হানায় মৃত্যু হয়েছে অসম রাইফেলসের জওয়ান শ্যামল দাসের। তাঁর মৃত্যুতে শোকের আবহ মুর্শিদাবাদের কান্দির নগরগ্রামে।
মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমার খড়গ্রাম ব্লকের কীর্তিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নগরগ্রামের বাসিন্দা শ্যামল। শনিবার সকালে মণিপুরে জঙ্গি হানায় নিহত হয়েছেন সেই শ্যামল। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে পরিবারে, আশপাশের এলাকায়। শ্যামলের সঙ্গে দিন দুয়েক আগে ফোনে কথা হয়েছিল তাঁর স্ত্রী সুপর্ণার। দু’দিন আগে একমাত্র মেয়ে দিয়ার জন্মদিন ছিল। সুপর্ণা জানাচ্ছেন, মেয়েকে ফোনে ‘হ্যাপি বার্থ ডে’ জানিয়েছিলেন শ্যামল। আরও জানিয়েছিলেন খুব তাড়াতাড়ি জন্মদিনের উপহার নিয়ে ফিরবেন বাড়িতে। কিন্তু তার আগেই নেমে এল আঘাত। শনিবার শ্যামলের বাড়িতে পৌঁছেছে জঙ্গিহানায় তাঁর মৃত্যুর খবর।
শ্যামলের বাবা ধীরেন বলছেন, ‘‘আমার দুই ছেলে। ছোট ছেলে কিছু দিন আগে মারা গিয়েছে। বড় ছেলে অসম রাইফেলসে কর্মরত ছিল মণিপুরে। এ বার ওর-ও মৃত্যু হল। আমি শোকাহত নই। কারণ আমি মনে করি আমার ছেলে শহিদ হয়েছেন। সরকারের কাছে অনুরোধ জঙ্গিদের খুঁজে বার করে যেন ফাঁসিতে ঝোলানো হয়।’’ রবিবার শ্যামলের মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই তাঁর বাড়িতে ভিড় জমান গ্রামের মানুষ। শ্যামলের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজোর আগেই তিনি বাড়ি ফিরেছিলেন, কিন্তু দুর্গাপুজোর ঠিক আগেই তাঁকে ফিরে যেতে হয়। অগ্রহায়ণ মাসে নবান্ন উৎসবের সময় ফেরার কথা ছিল শ্যামলের। কিন্তু তার আগেই এল তাঁর মৃত্যুর খবর।