মুষড়ে পড়া আর্জেন্টিনা সমর্থকদের ফের চাগিয়ে তুললেন লিয়োনেল মেসি। হেমন্তের হালকা শীতে রাত জেগে টিভিতে তাঁর বাঁ পায়ের সেই দৃশ্য দেখে তৃপ্তিতে ঘুমিয়েছেন ফুটবলপ্রেমী বহরমপুরবাসী। পরের দিন রবিবার ছুটির দিন সকালে বিছানা ছাড়ার তাগিদ তেমন ছিল না বলেই সেটা সম্ভব হয়েছে বলে মানছেন পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই সরকারি কর্মী অমলেশ সরকার। কলেজ পড়ুয়া তন্ময় দাসও রাত জেগেছেন মেসির পায়ের জাদু দেখার অপেক্ষায়।
বহরমপুর হিন্দ ক্লাবের সভাপতি শেখর সাহার বয়স ৬৯। তিনি বলেন, “আমি রাত আড়াইটে নাগাদ ঘুমোতে যাই। ততক্ষণে মেসির গোল দেখা হয়ে গিয়েছে। সম্ভাব্য চাম্পিয়ানের তালিকায় আমার পছন্দের আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল থাকবে। চার বছরে একবার বিশ্বকাপ হয়। শরীর খারাপ থাকলেও এই ফুটবল শিল্পের দর্শন ছাড়তে পারবো না।” বিশ্বকাপের তালিকা অনুযায়ী শনিবার চারটি খেলা ছিল। দুপুর ৩.৩০ থেকেই খেলা শুরু হয়েছিল। প্রথম খেলা টিউনিশিয়া বনাম অস্ট্রেলিয়ার খেলা ছিল। কিন্তু সেই খেলা দেখার টান তেমন ছিল না কলেজ পড়ুয়া সুদীপ মন্ডল, অনুপ ঘোষ, শিলায়ন পালদের। শিলায়ন বলেন, “ফ্রান্স ও ডেনমার্কের খেলাটাও দেখেছি। কিন্তু মূল লক্ষ্য ছিল রাত জেগে মেসির খেলা দেখা। এদিন প্রার্থনা করেছিলাম দলটা যেন জেতে। বন্ধুদের কাছে মানটা বাঁচল।”
দিন যত এগোচ্ছে ফুটবল নিয়ে উত্তেজনা তত বাড়ছে শহরের ঠেকগুলিতে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নামছে পারদ। এই সময় সাধারণত ছুটির দিনগুলিতে সন্ধ্যা হলে বহরমপুরের রেস্তরাঁগুলোয় ভিড় জমান শহরবাসী। সেই ভিড় ঠেলে রাত তিনটে গড়িয়ে যাচ্ছে কোথাও কোথাও। কোনও কোনও রেস্তরা এই সময় ক্রেতা টানতে অভিনব পরিকল্পনা নিয়েছে। বহরমপুর স্টেশন সংলগ্ন একটি চারতারা হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার সৈকত বড়াল বলেন, “আমাদের হোটেলে ৮৫ ইঞ্চিতে টিভি রাখা হয়েছে ফুটবল প্রেমীদের জন্য। সেখানে খাওয়ার ব্যবস্থাও আছে। শনিবার রাত তিনটে পর্যন্ত কফি শপে বেশ ভিড় ছিল মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের।” লাউঞ্জে খেলা দেখার ব্যবস্থা করেছে ইন্দ্রপ্রস্থের একটি রেস্তরাঁও। ওই রেস্তরাঁর পক্ষে প্রীতম পাল বলেন, “প্রতিষ্ঠানগত ভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আর্জেন্টিনার খেলা যেদিন থাকবে সে দিন সব খাবারে আর্জেন্টিনার সমর্থকদের জন্য সব খাবারে ৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে। খাবার বাড়ি নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও ছাড় পাওয়া যাবে। আবার রেঁস্তোরাঁয় বসে খেলেও ছাড় পাবেন। তবে ব্রাজিল-টাজিলের সমর্থকরা নিজেদের আর্জেন্টিনার সমর্থক বলে পরিচয় দিলে তারাও ছাড় পাবেন।”