তাপস সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগকারীদের বয়ান রেকর্ড। —ফাইল চিত্র।
চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়ে আর্থিক প্রতারণা করেছেন তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা। এই অভিযোগের কথা শুনেছেন রাজ্যের দুর্নীতিদমন শাখার আধিকারিকরা। এমনটাই দাবি করেছেন ইউসুফ বিশ্বাস। দিন কয়েক আগে ইউসুফ দুর্নীতিদমন শাখায় ইমেল করে তাপসের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ করেন। সেই মেলে তিনি জুড়ে দেন তেহট্ট থানাকেও।
তাপসের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আগেই উঠেছে। তার তদন্তভার রাজ্য পুলিশের দুর্নীতিদমন শাখার হাতে। বিভিন্ন থানায় এবং দুর্নীতিদমন শাখার কাছে তাপসের বিরুদ্ধে একাধিক লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার ভিত্তিতে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ডেকে পাঠানো হচ্ছে প্রতারিতদের। গত ৫ মে কয়েক জন প্রতারিতকে নবমহাকরণে ডেকে পাঠানো হয়। সেই তালিকায় ছিলেন ইউসুফ। তিনি তেহট্টের শ্যামনগরের বাসিন্দা।
ইউসুফ প্রাক্তন সেনাকর্মী। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যও বটে। তাঁর অভিযোগ, ছেলে আজিজকে চাকরি করে দেওয়ার নাম করে ৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বিধায়ক। সেই অভিযোগের তদন্তের জন্যই দুর্নীতিদমন শাখার তরফে ডেকে পাঠানো হয় ইউসুফ এবং আজিজকে। ইউসুফের দাবি, নবমহাকরণের নবম তলায় চার আধিকারিক তাঁদের বয়ান রেকর্ড করেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।
ইউসুফ এবং আজিজের কাছে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর চান তদন্তকারীরা। তাঁরা জানতে চান, সাত লক্ষ টাকা কয় দফায়, কী ভাবে এবং কার হাতে দেওয়া হয়েছে? যে টাকা দেওয়া হয়েছে তা কোথা থেকে পাওয়া গিয়েছে? আজিজ মেধাবী ছাত্র হওয়া সত্ত্বেও কেন চাকরির জন্য ইউসুফ টাকা দিলেন? এত দিন পর অভিযোগ জানালেন কেন? সম্প্রতি আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে তাপসের আপ্ত সহায়ক প্রবীর কয়ালক-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতিদমন শাখা।
আজিজের বক্তব্য, তাঁদের জবাবে সন্তুষ্ট তদন্তকারীরা। আজিজের দাবি, ‘‘তাপস সাহা যে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত তা এক কথায় তদন্তকারীরা মেনে নিয়েছেন।’’ ইউসুফ বলছেন, ‘‘সারল্যের সুযোগ নিয়ে আমার দলেরই বিধায়ক যে এ ভাবে আমাকে পথে বসাবেন, তা ভাবতেও পারিনি। চাকরিও দিতে পারেননি। এখন পয়সাও দিতে চাইছেন না। তাই বাধ্য হয়ে টাকা উদ্ধার করতে এখন আমাকে ছুটোছুটি করতে হচ্ছে।’’
এ বিষয়ে তাপসের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।