প্রাক্তনীদের পদযাত্রা। নিজস্ব চিত্র
অনেক দিন ধরেই বিষয়টি নিয়ে মতভেদ, বিতর্ক চলছিল।
কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের জমিতে যাতে কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয় ও হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি না-হয় তার জন্য বুধবার জেলাশাসকের কাছে ডেপুটেশন দিলেন কলেজের প্রাক্তনী সংসদের সদস্যেরা। মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও চিঠি পাঠিয়েছেন তাঁরা।
কৃষ্ণনগর শহরে মেয়েদের জন্য কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির ঘোষণা আগেই করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জমি দেখতে শুরু করে জেলা প্রশাসন। প্রথমে ঠিক হয়, কৃষ্ণনগর শহরের পাশে গোদাডাঙা এলাকায় পুরসভার জমিতে তৈরি হবে এই বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু মাঝ পথে তা থমকে যায়। তার পর ঠিক হয়, কৃষ্ণনগর গভর্নন্ট কলেজের জমিতে তৈরি হবে বিশ্ববিদ্যালয়। সেই জমি দেখে প্রাথমিক ভাবে পছন্দ করে যান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু একাধিক কারণ দেখিয়ে প্রথম থেকেই কলেজের জমিতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয় তৈরিতে আপত্তি জানান প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের একটা বড় অংশ। তাঁদের দাবি, কলেজের জমিতে কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয় হলে জমি অনেকটাই কমে যাবে। তাতে গভর্মেন্ট কলেজের বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হওয়ার রাস্তা বন্ধ হতে পারে। কলেজের একাংশে একটি পুকুর ছিল। তা বুজিয়ে ফেলা নিয়েও তাঁরা আপত্তি জানান।
প্রাক্তনী সংসদের সম্পাদক খগেন্দ্রনাথ দত্ত বলছেন, মাঠ অর্ধেকের বেশি দখল হলে আমাদের কলেজে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির সম্ভাবনা আটকে যাবে। তাছাড়া একটা পুকুর বুজিয়ে ফেলা হল। তাতে পরিবেশের ক্ষতি হবে। সেটা কোন ভাবেই হতে দেওয়া যায় না। এর পাশাপাশি এই কলেজকে হেরিটেজ মর্যাদা দান, কলেজের তিনটে মাঠকেই খেলার উপযোগী করে তোলা, প্যাভেলিয়নটিকে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা, কলেজের শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করার মতো দাবি রেখেছি আমরা।
প্রক্তনী সংসদের দাবি, প্রায় একশো বিঘা জমির উপরে এই কলেজ তৈরি হয়েছিল। খগেনবাবু বলেন, ‘‘যে ভাবে কলেজে পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়ছে তাতে এক সময় এই জমিও কম হয়ে পরবে। আমাদের দেখতে হবে যে, ১৭৪ বছরের পুরনো ঐতিহ্যমন্ডিত কলেজের সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন যেন রুদ্ধ না হয়। বাম আমলে এই কলেজের মাঠেই একটি আন্তর্জাতিক মানের ‘ট্রাক অ্যান্ড ফিল্ড’ তৈরির করতে চেয়েছিলেন কৃষ্ণনগরের তৎকালীন সাংসদ সিপিএমের জ্যোর্তিময়ী সিকদার। সেটি তৈরির কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সে দিন সেই একই কারণ দেখিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন কৃষ্ণনাগরিকদের একটা অংশ। এ বারে সই সংগ্রহ অভিযানের সম্ভাবনার কথা উস্কে দিয়ে খগেনবাবুরা বলেন, ‘‘প্রয়োজনে আমরা আইনের পথে হাঁটব।’’ এই বিষয়ে অবশ্য মন্তব্য করতে চাননি কলেজের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শোভন নিয়োগী।